ভাদ্রের বৃষ্টিভেজা দিনে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত হয়েছে কবিতা বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী ও কবি সম্মেলন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে জাগিয়ে তুলতে কবি ও সংস্কৃতি কর্মীরা দুর্দান্ত সাহস জুগিয়েছেন। বৈষম্যমুক্ত সমৃদ্ধ স্বদেশ নির্মাণে কবিতাকে যুক্তি-শক্তি-মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে আরও শাণিত করতে হবে। ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে প্রতিটি স্লোগানই ছিল অনন্য কবিতা।
কবি কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ ও সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানানো হয়।
আয়োজনের শুরুতেই উৎসব লোগোর মোড়ক উন্মোচন করেন বরেণ্য শিক্ষাবিদ ড. আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী।
কবিতা বাংলাদেশের সভাপতি কবি আল মুজাহিদীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত উৎসবে এবারের উৎসবের প্রতিপাদ্য ছিল- ‘ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত, আমরা আনিব রাঙা প্রভাত।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ড. মাহমুদ শাহ কোরেশী, প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, কবি জয়নুল আবেদীন আজাদ, কবি মোশাররফ হোসেন খান, কবি সোলায়মান আহসান, কবি হাসান আলীম, কবি চৌধুরী গোলাম মাওলা, কথাশিল্পী নাজিব ওয়াদুদ, কবি শরীফ আবদুল গোফরান, কবি নাসির হেলাল প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আমি কবি নই তাই কবি সম্মেলনে আমাকে বড় বেমানান। তবে কবিতাকে ভালোবাসি বলেই আপনাদের অনুষ্ঠানে এসেছি। এবারের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে কবিরা যেভাবে সবাইকে উজ্জীবিত রেখেছেন বলেই গণবিপ্লব সফল হয়েছে। এটাই ইতিহাসে বাংলা রেনেসাঁ হিসেবে বিবেচিত হবে। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমেই বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হবে।
রজতজয়ন্তী উৎসবের দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে ‘বাংলাদেশের কবিতা : উৎস থেকে অধুনা’ শীর্ষক ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ড. ফজলুল হক তুহিন।
কবি জয়নুল আবেদীন আজাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন কবি আবদুল হাই শিকদার, কবি সোলায়মান আহসান, কবি হাসান আলীম, কবি সায়ীদ আবুবকর প্রমুখ।
সেমিনার পর্ব উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন।
সম্মেলনের তৃতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ। এ পর্বে সভাপতিত্ব করেন কবি সাজ্জাদ হোসাইন খান ও কবি আশরাফ আল দীন।
এই পর্ব উপস্থাপন করেন কবি নাইম আল ইসলাম মাহিন। অনুষ্ঠানে সারা দেশ থেকে আগত দুই শতাধিক কবি তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
আলোচনা করেন লেখক ও গবেষক ইমরান মাহফুজ প্রমুখ।
কবি সম্মেলনের সমাপনী ও কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের আহ্বায়ক ড. আবু জাফর মোহাম্মদ ওবায়েদুল্লাহ। পরিচালনা করেন দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের সদস্য সচিব ড. মোস্তফা মনোয়ার।
এ পর্বে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি চিন্তক আমীরুল ইসলাম, কথাশিল্পী নাজিব ওয়াদুদ, চারুশিল্পী ইব্রাহীম মণ্ডল, বাচিক শিল্পী মাহবুব মুকুল, মুক্তবুলি সম্পাদক আযাদ আলাউদ্দীন প্রমুখ।
কাউন্সিল অধিবেশনে কবি আল মুজাহিদী এবং কবি ও গবেষক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দকে পুনরায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে একটি পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়।