মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
ক্লাসে বিশ্বনবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল ফিরে দেখা’র উনযুগপূর্তি উৎসব পালিত জমকালো আয়োজনে ৭৬ তম আর্ন্তজাতিক ক্রেডিট ইউনিয়ন দিবস পালিত বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে ফিলিস্তিনের মুজাহিদদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান -অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খোকসায় মুফতি ফয়জুল করীমের যাত্রা বিরতি পাংশায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য পাংশা পৌর সভায় মন্দির সমূহে নিরাপত্তায় কাজ করেছেন যুবদল নেতা আশরাফুল ইসলাম ফরিদ পাংশায় র‌্যালী মহড়া ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় আপনাদের পাশে ছিলাম আছি থাকবো -হারুন অর-রশিদ হারুন পাংশায় নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু প্রধান উপদেষ্টার সাথে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক খোকসার ফুলবাড়ি গ্রামে সিরাজ সর্দার কর্তৃক রাসুল (সঃ) কে কটূক্তি স্বামীর পরোকিয়া জেনে ফেলাই  কাল হলো রুমা’র !
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

হৃদয়ে বাজিছে সদায় কবি তোমার নাম

খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন / ২৫৭ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

হৃদয়ে বাজিছে সদায় কবি তোমার নাম

কর্মস্থলে বসে কাব্য চার্চারত অবস্থায় কবি মুহ. রেজা উল করিম

বেশ কিছু দিন গত হয়ে গেলো আমার ফোনে তার কোনো কল আসে না। আমার শরীরের খোঁজ খবর নেন না তিনি। তাঁর শরীর যে ক্রমশ কুঁকড়ে যাচ্ছিলো কিন্তু কখনোই কল্পনাতেও আনছিলেন না। তিনি যে, আর বেশি দিন এভাবে কুলিয়ে উঠতে পারবেন না। তা তিনি হয়তো বুঝতেই পারছিলেন না। আমিও বিরক্ত করতাম খুব। আমার খুব ইচ্ছে ছিলো তিনি সুস্থ থাকতে থাকতেই একখানা পান্ডুলিপি প্রকাশ করবো। যে ভাবেই হোক আমাকে করতেই হবে এমন ব্রত নিয়ে বারবার ফোন দিতাম আমিও। কথা হতো এই পান্ডুলিপি প্রস্তুতের নানা দিক নিয়ে।

অশীতিপর এই বুড়ো মানুষটির মন ছিলো খুব আশাবাদী। আমি তাঁর রক্তসম্পর্কহীন একজন দূরের মানুষ এমনটা অনুভব তিনি করেননি হয়তো। আর আমিও কেনো যেনো খুব খুব ভালো বেসে ফেলেছিলাম এই বুড়ো মানুষটাকে। একজন কবিকে। একজন পিতাকে। একসময় পাশাপাশি ছিলাম বহু বছর কিন্তু দেখা করিনি কখনো, অনেকটা ভয়ে। যার লেখা পড়েছিলাম আমার কৈশরেই। তখন থেকেই তার প্রেমে পড়েছিলাম। সাহস হয়নি ভালোবাসা প্রকাশ করতে যাওয়ার।

ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখছেন কবি

যখন প্রকাশ করেছিলাম তখন আমি খোকসার বাইরে তথা হেমায়েতপুরেই বসত করতে শুরু করে দিয়েছি। একদিন খোকসা বাজারের পুরাতন কৃষি ব্যাংকের সামনে মঙ্গলবারের যানজটপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে একদম মধ্য সড়কে দেখা হলো। তিনি আমাকে সিনেমাটিক স্টাইলে বুকের ভেতরে নিলেন। আমরা কোলাকুলি করলাম। ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা সহ অগণিত যানবাহন দুইপাশে দাঁড়িয়ে রইলো। সকলেই যেনো অপেক্ষা করছিলেন আমাদের কোলাকুলি শেষ হলেই তবে যাবে। কী আশ্চর্য ব্যাপার। কেউ বিরক্ত হলো না। ধমকালো না। সবাই হয়তো বুঝেছিলেন, আমরা একান্ত এক বিশেষ মুহুর্ত পেয়েছিলাম। যে সময় পৃথিবীর সব কিছু ভুলে যায় মানুষ। আমরাও ভুলে গিয়েছিললাম। আমি বিষয়টি লক্ষ্য করে হন্তদন্ত হয়ে বললাম, আঙ্কেল চলুন রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলি। আমার পিছে থাকা স্ত্রী শেলী ততক্ষণে রাস্তার পাশের মরহুম হাজী জালাল উদ্দিনের মার্কেটের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা সেখানে দাঁড়ালাম এবং কুশল বিনিময় করলাম।

তারপর সন্ধ্যায় আবার দেখা করার অর্ডার পালন করতে গিয়ে দেখা হলো তার চেম্বারে। কত সব স্মৃতি। কত অনুভূতি। সাথে করে নিয়ে গেলেন তাঁর পছন্দের ফাষ্টফুডের দোকানে, সেখান থেকে একটি চায়ের দোকানে। আপ্যায়নের পর আপ্যায়ন করিয়েই চলেছেন।

তারপর থেকে বহু কথা হয়েছিল। বহুবার দেখা হয়েছিল।

কস্তুরিকা সম্পাদিত হলো তাঁর সম্পাদনায়। একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী সৃষ্টি এটি। কস্তুরিকার স্বীকৃতি এলো কিছুদিন আগে ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম সম্মাননা প্রাপ্তির মাধ্যমে। খোকসার কিছু কবি, গ্রন্থ লেখক- সম্পাদককে দেওয়া হলো সম্মাননা তিনিও পেলেন।

বলতে শুরু করেছিলাম, আঙ্কেল সবল থাকতেই তার কবিতার বই প্রকাশ করে ফেলবো এবং ঢাকায় অথবা খোকসার কোনো একটি ভেন্যুতে প্রকাশনা অনুষ্ঠান করবো তাকে নিয়ে। নিজেই দায়িত্ব নিয়ে করতেও চেয়েছিলাম। এদিকে তাঁর পুত্র রেদোয়ানুল করিম রনজু ভাই এর অনুমতিও নেওয়া হয়ে গিয়েছিলো। তিনি জানালেন যতদ্রুত সম্ভব কাজটি করো। বাবার শরীর খুব একটা ভালো নেই।

আমি মাঝে মাঝে আঙ্কেলের ফোনে কথা বলে এমনটাই বুঝতে পারতাম কিন্তু তিনি চিকিৎসক। তিনি একজন কবি। আশাবাদী মানুষ। তিনি ভাবতেন এইতো চিকিৎসা চলছে। মোটামুটি কিছুদিন পরেই সুস্থ হয়ে উঠবো।

এর মাঝে একটি পান্ডুলিপির কাজ চলছে। চলতে চলতে মাইক্রোডিল কম্পিউটারের কর্ণধার সোয়েব অসুস্থ হয়ে পড়লো। সে কিছুদিন চিকিৎসার ব্যস্ততা সেরে এসে রেডি করলো একটা পান্ডুলিপি।

দেখা করে পান্ডুলিপি চাইলাম। বললেন, আর কয়েকটা দিন সবুর করো বাবা। পান্ডুলিপি এটার চেয়ে আরও ভালো কিছু লেখা আছে। সেগুলো কারেশন করছি। ভালো একটা বই আসুক। ধীরে ধীরে তিনি যে, আল্লাহর সান্নিধ্যে যাত্রা করবেন তিনি কী জানতেন?

আল্লাহ তায়ালা কবুল করুন প্রিয় কবি মুহ.রেজা উল করিম আঙ্কেলকে।

আমরা সকলেই একদিন জাদুময় এই পৃথিবীর মোহকে কোরবানী করে চলে যাবো। চলে যেতেই হবে। এটি প্রাণীকূলের জন্য অবধারিত আইন। এ আইন লঙ্ঘনের কোনো উপায় নেই। পবিত্র আল কোরআনেও এভাবেই বলা আছে। আল্লাহর প্রিয়নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও তার দেহ মুবারক ত্যাগ করতে হয়েছে। এটিই চিরন্তন সত্য বিধান। যা অলঙ্ঘনীয়। তেমনিই বিধাতার চিরাচরিত নিয়ম মেনেই চির বিদায়ের পথে যাত্রা করতে হয়েছে কবি মুহ. রেজা উল করিম আঙ্কেলকে।

তাঁর সাথে তাঁর জীবনের একেবারেই শেষ দিকে যোগাযোগ হয় আমার। যদিও তাঁর মনের শক্তি ছিলো অনেক বেশি। আমি ভাবতাম তিনি এখনই বিদায়ের জন্য প্রস্তুত নন। তা-ই হয়ত ভাবছেন আর কিছুদিন সময় লাগলেও একটি ভালো পান্ডুলিপি প্রকাশ করে যাই।। নিজ হাতে প্রুফ সংশোধন করতে চান। বলেছিলাম, আপনার প্রিয় আত্মীয় বিশিষ্ট গীতিকার মুহাম্মদ রফিকুজ্জামানের সহযোগিতা নিয়ে প্রুফ /ডামি সংশোধন করে দেই। সরাসরি না বলেননি যদিও তবে নিজ হাতেই করবেন এমনটা আশা ছিলো তার। বললাম, তাহলে আপনার বন্ধু ধ্রুব এষকে দেই প্রচ্ছদ করে দিক। না তিনি তাতেও খুশি হলেন না। বললেন, জাহাঙ্গীর- তুমি কী দেখেছো, কস্তুরীকার প্রচ্ছদটা কত সুন্দর হয়েছে। সেটা আমার নিজ হাতে করা প্রচ্ছদ ছিলো। বললাম, নিজ হাতে করা যে কোনো শিল্পকর্মই নিজের কাছে সেরা মনে হয় এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার। কবিতার বইটির প্রচ্ছদ অন্তত প্রফেশনাল কারো দিয়ে করানো উচিৎ।

তিনি বললেন, আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করো। ধৈর্য হারাও কেনো। কিন্তু কোনোভাবেই বলতে পারছিলাম না যে, আপনি অতো বেশি সময় হয়তো পাচ্ছেননা আঙ্কেল। আপনি অনেক বেশি দূর্বল হয়ে পড়েছেন। আত্মশক্তি বিলীন হতে চলেছে। বার্ধক্য আপনাকে হেনস্তা করছে রীতিমতো। আপনি আল্লাহর ডাকে সাড়া দিতে পারেন যে কোন সময়। ঈশারা ইঙ্গিতেও বুঝাতে চাই নি কখনো। যদি মানসিক শক্তি নিথর হয়! এমন ভীতিই আমাকে ওকথা বলতে দেয়নি। কিন্তু আঙ্কেল মাঝে মাঝে হয়তো মৃত্যুকে স্মরণ করতেন। এইতো বারবার অসুস্থ হওয়ার একটি পর্যায়ে তিনি ফেসবুকে পোষ্ট করেছিলেন এভাবে -“কুল্লু নাফসুন জায়েকাতুল মওত ” । আল্লাহ্ পাকের এই অমোঘবাণীকে আমি সর্বাত্মক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করি । আল্লাহ্ পাক এ কথাও এরশাদ করেছেন ‘তুমি ডাইনে থেকে বামে সালাম ফেরানোর সুযোগ পাবেনা ।’ আরো বলেছেন’ তোমাদের আমি পৃথিবীতে পাঠিয়েছি আবার আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে ‘ । আমার বয়স হয়েছে আমি আমার সৃষ্টিকর্তার কাছে যাবার জন্য প্রস্তুত । আমার সব জানা অজানা অপরাধের জন্য আল্লাহ্ পাকের কাছে প্রার্থনা করছি ।আপনাদের কাছেও আবেদন কাউকে জানা অজানা কোন কষ্ট দিলে আমাকে মাফ করে দেবেন।”

২০২১সালের জুন মাসের দিকেও লিখেছেন এভাবে –

কিচ্ছু ভাল লাগেনা । চারপাশে মৃত্যুর সমারোহ । আপন জনদের মাঝেও করোনায় পৃথিবীর বুক থেকে চলে গেছে । নিজে সারা সময় আতংকিত থাকি ।বাইরে বার হৈনা । পরিবারের প্রায় সবাই অসুস্থ । কত সময় আর শুয়ে বসে থাকবো ? পৃথিবীতো এমন ছিলনা । কেন হলো ? আমরা গুনাহগার , আল্লাহ্ পাকের কঠিন পরিক্খা আমাদের উপর । বয়সের কারনে আমি অনেক রোগে আক্রান্ত । শরীরে ইমিউনিটি শূন্যের কোঠায় । উপ রন্তু স্বজন বান্ধবহীন । মনের কষ্ট শেয়ার করার কেউ নেই । এক ভয়াবহ শূন্যতা , ভয় , আতন্ক দিন রাত । এ চিত্র শুধু আমার না । সারা বাংলাদেশের । মানুষ হাঁসতে ভূলে গেছে । আকাশ বাতাস এক মহা ভয়ে কুঁকড়ে আছে । একমাত্র প্রশান্তি নামাজ ।সেই মহান আল্লাহ্ পাকের কাছে কমপ্লিট সারেন্ডার । মাফ চাওয়া , তাওয়াক্কল করা । আল্লাহ্ আমাদেরকে হেফাজত করুন । মনোবল ঠিক রাখা আর কতোখন ? আল্লাহ্ আমাদেরকে মাফ করুন । আমরা নিয়মিত নামাজ আদায় করে সেই সর্বশক্তিমানের কাছে নাজাতের প্রার্থনা করি । যেন এই গজব থেকে আমাদের উদ্ধার করেন । এই মৃত্যু পূরী আবার স্বতঃস্ফূর্ত হোক । মসজিদে আজান ধ্বনি উতসারিত হোক । আবার হাঁসুক পৃথিবীর মানুষ। আবার হাঁসুক , মূখরিত হোক কলকাকলিতে । আমরা বুক ভরে শ্বাষ নিয়ে সেই মহান আল্লার শোকর আদায় করি । আমিন । ছুম্মা আমিন ।

তখন করোনার তীব্র ঘাই চলছিলো। মানুষের মৃত্যুর খবর তাকেও বিচলিত করেছিলো। স্মরণ করিয়েছিলো মৃত্যুকে।

আঙ্কেলকে আরও একটা সময় খুব ফোন করতাম। যখন আমি দ্বিজেন স্যারকে স্মরণ করে একটি বই প্রকাশ করছিলাম তখন। দ্বিজেন স্যার ছিলেন তার বন্ধু। স্মৃতি ছিলো অনেক। লিখেছিলেন তিনি।

গত রমজান মাসে ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি নাকি সভাপতি হিসেবে ছিলেন তিনি। কবি ওয়াজেদ বাঙালি স্যার আমাকে জানালেন কবি মুহ.রেজা উল করিম আঙ্কেলকে যেনো আমিই সাথে করে নিয়ে আসি। জালাল আহমেদকে সাথে করে সরাসরি তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম। তিনি এলেন। কথা বললেন।

খোকসার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সমাগম হয়েছিল সেখানে। তারপর আবার বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে এলাম জালাল আহমেদ আর আমি। আঙ্কেল হোন্ডা থেকে নেমে আবারও জড়িয়ে ধরলেন বুকে। জানিনা কী আশিষ করে গেলেন সেদিন। কবুল করুন হে আল্লাহ সুবাহানাহু অতায়ালা

কবিতার কিছু বুঝিনা আমি। এটা আমার কাছে কঠিন বিষয়। অনেকেই বলেন, ছাগশিশুদের তৃতীয়টার মতো শুধু লাফাচ্ছি আমি। দুধের স্বাদ না পেয়েই পাবার আশা রাখে যে, ছাগশিশুটি। ছাগীর দুধের বোঁটাতো দুটোই। দুটি বাচ্চা মুখ লাগিয়ে দেদারসে টানছে আর তৃতীয়টিতো নিরুপায়। সুযোগ খুঁজছে। কোনো মতো সুযোগটা পেলেই দুটি টান দেবার আশায় এদিক সেদিক ফাঁদিফুদি করে। অবশেষে সে মাতার দুধের বোঁটায় মুখ দিতে পারে হয়তো। নইলে উপোষ থাকতে হতো। ভোগের অভাবে এক সময় হয়তো মরেও যেতে পারতো। কিন্তু তারা অধিকাংশই মারা যায় না। বেঁচে থাকে। দুগ্ধপানের সংগ্রাম করেই তাকে বেঁচে থাকতে হয়।

আমিও ধরুন একজন ওই কেসেমের কবি। পাচ্ছি না পুষ্টিকর সেই মাতৃদুগ্ধ তবে পেয়েছি অনেক কিছু। লেখতে পারিনি কোনো কবিতা তবে যারা লেখেন তাদের লেখার পাঠক যে একদমই হইনি তা নয়।

আর এই কবি কবি খেলা খেলতে গিয়ে কিছু কবি পেয়েছি তাদের লেখা আমি পড়ি। তাদের মধ্যে কয়েকজন রেজা আছে।

রেজা উদ্দিন ষ্টালিন, মুহাঃ রেজাউল হোসেন, মুহ. রেজা উল করিম, রেজা মুহাম্মদ। কবিতা ছাড়া কমবেশি ভিন্ন বিষয় লেখতে দেখেছি, এ্যাড. রেজাউল ইসলাম ও অরণ্য রেজা ভাইকে। এই রেজাদের প্রতি অকুন্ঠ শ্রদ্ধা। সম্প্রতি হারালাম কবি মুহ. রেজা উল করিম আঙ্কেলকে। এনাদের সাহচার্য লাভ আমাকে ধন্য করেছে। আর সে সাক্ষাৎ সাহচার্যটা ক্ষণকালের হোক তবুও আমি ধন্য। এসকল মহত মানুষ গুলিকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে আমাকে কবিতার প্রতি অকৃত্রিম দুর্বলতা।

মুহ. রেজা উল করিম আঙ্কেল পেশায় ছিলেন একজন চিকিৎসক। খোকসা উপজেলার মধ্যে পুরোনো ও বয়োঃবৃদ্ধ চিকিৎসক ছিলেন তিনি। এলাকায় রেজাউল ডাক্তার নামে মশহুর ছিলেন।

শবনম ফার্মেসীতে বসতেন তিনি। আঙ্কেলের কোনো ছেলে তার নাম রনি। শবনম ফার্মেসিতে তিনিই বোধ হয় থাকতেন। রনি ভাই মাঝে মাঝে আমার খন্দকার কম্পিউটার সেন্টারেও এসে বসতেন। সম্ভবত সামনের সেলুনটায় সেভ করাবার জন্য খোকসা বাজারের লতাবাহার হোটেলের গলিতে আসতেন। সেই থেকে রনি ভাই এবং পরে সিদ্দিকুর রহমান ডায়মন্ডের টেইলার্স থেকে রিংকু নামের এক ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল। তিনিও কবি রেজা উল করিম আঙ্কেলের ছেলে। যাহোক, রনি ভাই খুব কম কথা বলতেন। হয়তো জুনিয়র একজন কম্পিউটার অপারেটরের সাথে তার তেমন কোনো কথা থাকবার কথাও ছিলো না। একদিন রনি ভাই বললেন, আমার বাবা আজ একটা বিশেষ কবিতা লেখেছেন। আমি অতোটা গুরুত্ব দিয়ে শুনিনি। তিনি আবারো আমাকে আকর্ষণ করে বললেন, জাহাঙ্গীর জানো, আজকের মতো একটা তারিখ শতাব্দীতে একবারই আসে। মনোযোগ দিলাম। আজ ১০.১০.২০১০ সাল। তারিখটা খুব মনে ধরলো।

কবিতা নিয়ে আলোচনায় গেলাম নাকি গেলাম না সেটুকু মনে নেই। হয়তো রনি ভাই বলতে পারবেন তার কিছুটা মনে থাকলে।

একথায় রনি ভাই আমার কাছে ছিলেন বিশেষ সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র। কারণ তিনি কবি মুহ. রেজা উল করিম আঙ্কেল ছেলে। আমার খুব অহংকার আমার আব্বাকে নিয়ে। তার পেশা ও প্রতিভার প্রেমিক আমি। আব্বা আমার কাছে আমার প্রিয় নায়ক এবং কাজী নজরুল ইসলামের লেখা….”ভোর হলো দোর খোলো খুকুমণি ওঠরে’ জাতীয় ছড়া মুখস্থ করানোর ওস্তাদ । তিনিই প্রথম পড়ান আমাকে। কিন্তু আব্বা যদি কবি হতেন আমার আরো ভালো লাগতো।। একজন কবির সন্তান আসলেই তিনি ভাগ্যবান। আমাদের রনি ভাই সেই হিসেবে কবিপুত্র। এটা আমাকে খুব ভাবাতো তখন। সাপ্তাহিক দ্রোহ বের হতো মঙ্গল/বুধবারে।

মুনসী লিটন তিনি আমাদের গুরু। তিনি মাঝে মাঝে মুহ. রেজা উল করিম আঙ্কেলের কবিতা ছাপতেন দ্রোহ সাহিত্য পাতায়। সাথে থাকতো কাকতাড়ুয়ার কলাম। ছোট কাগজ হলেও দ্রোহ আমার কাছে ছিলো খুব প্রিয়।

আর দ্রোহই আমার সামনে হাজির করেছিলো এক অহংকারমুক্ত শান্ত কবি মুহ. রেজা উল করিম নামের এক কবিকে। কবির চলে যাওয়ায় শূন্য হলো খোকসার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের একটি বিশাল বটবৃক্ষ।

 

খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন

কবি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক

সম্পাদক প্রকাশক, বাংলাদেশ ভূমি

মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর