মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
ক্লাসে বিশ্বনবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল ফিরে দেখা’র উনযুগপূর্তি উৎসব পালিত জমকালো আয়োজনে ৭৬ তম আর্ন্তজাতিক ক্রেডিট ইউনিয়ন দিবস পালিত বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে ফিলিস্তিনের মুজাহিদদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান -অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খোকসায় মুফতি ফয়জুল করীমের যাত্রা বিরতি পাংশায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য পাংশা পৌর সভায় মন্দির সমূহে নিরাপত্তায় কাজ করেছেন যুবদল নেতা আশরাফুল ইসলাম ফরিদ পাংশায় র‌্যালী মহড়া ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় আপনাদের পাশে ছিলাম আছি থাকবো -হারুন অর-রশিদ হারুন পাংশায় নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু প্রধান উপদেষ্টার সাথে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক খোকসার ফুলবাড়ি গ্রামে সিরাজ সর্দার কর্তৃক রাসুল (সঃ) কে কটূক্তি স্বামীর পরোকিয়া জেনে ফেলাই  কাল হলো রুমা’র !
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রিয় সাজ্জাদ ভাই ।। হারুন আল রাশিদ 

হারুন আল রাশিদ / ৪০৩ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় বুধবার, ১৯ মে, ২০২১, ৫:১০ পূর্বাহ্ন

মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রিয় সাজ্জাদ ভাই
হারুন আল রাশিদ
দীর্ঘদিন থেকেই সুপ্ত আকুতি মনের ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছে। কয়েকদিনের জন্য তাবলীগ জামাতে যাবো। এখনকার মতো তাবলীগ জামাতের দাওয়াতি কর্মকান্ড নিয়ে সংশয় ছিলো না তেমন কারো। স্রেফ মহান রবের সন্তুষ্টির জন্য ঘর থেকে বের হয়ে ঈমানকে মজবুত করা। সাথে সাথে ইসলামের বুনিয়াদি কাজের তালিম নেওয়া। সব শ্রেণীর মানুষ এই জামাতের প্রতি এমন ধারণাই পোষণ করতো। যদিও ইদানিং দ্বি-মত দেখতে পাওয়া যায় কিছু কিছু কাজের ভেতরে। যারা পক্ষে কথা বলছেন তাদের অনেকে দেশ বরেণ্য আলেম। বিপক্ষে মতামত দানকারীদের মধ্যেও ইসলামিক স্কলারের সংখ্যা নেহায়েত কম না।
সেদিকে যেতে চাচ্ছি না আজ। পুরনো স্মৃতির একটা পর্দা সরানোই আমার উদ্দেশ্য। ছয়-সাত মাস পরই দাখিল পরীক্ষা। মনের বাসনা পূরণ করার জন্য সুযোগ খুঁজতেছি টেস্ট পরীক্ষার আগেই।
বাজারের নাম মির্জাকালু। অনেক বড় বাজার। তিনটা মসজিদ। বড় মসজিদের সামনেই আমাদের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর।
এক বিকেলে আসর নামাজের পর বাজার দিয়ে হাঁটছি। সেদিন ছিলো হাটবার। আগের দিন মসজিদে তাবলীগের একটা জামাত এসেছে। অধিকাংশই বিত্তশালী। পোশাকে, আচরণে অনুমেয় হচ্ছে। তারাও অনেকে হাটের ভেতর ঘোরাঘুরি করছেন।
কম বয়সী চশমা পরা এক ভদ্রলোকের ওপর চোখ পড়ছে বারবার। সুন্দর পোশাকের ভেতরে সুদর্শন  চেহারা। মুখে খোচাখোচা দাঁড়ি। বেশকিছু দিন সেভ করা হয়নি। দেখেই বুঝা যাচ্ছে। ব্যক্তিত্ববানদের চিনতে কষ্ট হয় না আমার। তাদের অবয়বে প্রজ্ঞার ছাপ থাকে। ভিন্ন চেতনার মানুষ তাকে চিনে নিতে পারে সহজেই। আমারও সমস্যা হয়নি সামান্য।
প্রয়োজনের অভিনয় করে ঘুরতে লাগলাম আশেপাশে।
খুব ভালো লাগছিলো লোকটাকে। কি সুন্দর মায়াবী চেহারা! চলাফেরায় চমৎকার ভাঁজ। সাহস পাচ্ছিলাম না কিছু জিজ্ঞেস করতে। অন্তর থেকে কামনা করছি উনি যেনো স্বেচ্ছায় আমার সাথে কথা বলেন। আল্লাহ পাকের কি অপার মহিমা, আমার দিকে এগিয়ে আসলেন ভদ্রলোক। হাত বাড়িয়ে দিলেন। বাড়ালাম আমিও। একধরণের প্রশান্তি অনুভব করলাম মুসাফাহায়। নামটা জেনে নিলাম। ব্যক্তিত্বের সাথে মানানসই নাম সাজ্জাদ হোসাইন।
আমলের গুরুত্ব নিয়ে কথা বললেন কিছুক্ষণ। অপটু কথাবার্তা। বুঝে নিলাম দাঈ হিসেবে খুবই নতুন। দাওয়াতি কাজে পারঙ্গমতা আসতে সময় লাগবে আরেকটু। মাগরিবের পর মসজিদে থাকতে বললেন। রাজি হয়ে গেলাম।
বাদ মাগরিবের বয়ান শেষ হলো। ত্রিশ মিনিট বাকি আছে এশার নামাজের। আমাদের কয়েকজনকে নিয়ে বসলেন সাজ্জাদ ভাই। কোরআন – হাদিসের জ্ঞান কম থাকলেও সুন্দর গুছিয়ে বলতে লাগলেন দ্বীন সংক্রান্ত  স্বাভাবিক কথাবার্তা। লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালোলাগে। কথা শুনতে ভালোলাগে। পাশে বসতে ভালোলাগে। কি যে ভালোলাগার অনুভূতি কাজ করতে লাগলো আমার ভেতরে। আজ অবধি কোনো পুরুষ মানুষকে এতোটা ভালোলাগেনি আমার। চারদিন ছিলেন আমাদের এলাকায়। যাদুর মতো আটকে রাখতেন আমাকে সাথে সাথে। এখান থেকে মনপুরা যাওয়ার আগেরদিন নিয়ে আসলাম দোকানে। বসলেন। কথা বললেন আব্বার সাথে। হঠাৎ সুন্দর মুখটা হালকা নাড়া দিয়ে তাকালেন আমার দিকে। তারপর আব্বার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললেন,
‘ মনপুরা যাচ্ছে আমাদের জামাত।আগামীকাল। হারুনকে সাথে নিয়ে যাবো। তিনদিনের জন্য। ছেড়ে দেবো তিনদিন পর। ‘
আব্বা সম্মতি দিলেন। আমি তো যাওয়ার জন্য উড়াল দেয়ার অপেক্ষাই ছিলাম।
ফজর নামাজের পর নাস্তা করে বেডিং গোছাতে লাগলাম। ফ্রেস হয়ে মুরুব্বিদের কাছে দোয়া নিয়ে রওয়ানা হলাম। মনপুরা যেতে হবে ট্রলারে। সুন্দর সারিবদ্ধভাবে হাঁটতে লাগলাম। শৃঙ্খলা রক্ষা করেই ট্রলারে উঠে বসলাম। সাথী ভাইয়েরা ব্যস্ত হয়ে পড়লেন যাত্রীদের মাঝে দাওয়াতি কাজে। তাসখেলা, খোশগল্প, গান শোনার দুনিয়াবি রংতামাশার পরিবেশে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লো জান্নাতি সুঘ্রাণ।
দুই ঘন্টা সময় লাগলো। আমরা মনপুরা নামলাম। এগিয়ে যাচ্ছি উপজেলা মসজিদের দিকে। একজন বয়স্ক ডাক্তার ছিলেন সাথে। হাঁটতে পারছিলেন না। আমীর সাহেব একটা রিকশা ডাক দিয়ে অনেকটা জোর করেই উঠিয়ে দিলেন। ডাক্তার সাহেব সাজ্জাদ ভাইকে তার পাশে বসতে বললেন। সাজ্জাদ ভাই রিকশায় উঠে পরক্ষণেই নেমে গেলেন। বললেন, ‘ভালো দেখাচ্ছে না।’ সুন্দর মানুষের সুন্দর আচরণে এতোটাই বিমোহিত হলাম যার রেশ এখনো রয়ে গেছে।
বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ ভোলা। আবার ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন একটি অংশ মনপুরা। সারাক্ষণ শো শো বাতাস। চারিদিকে চমৎকার পরিবেশ। গাছপালা, পুকুর, নদী ছবির মতো মনে হতে লাগলো। তিনটা দিন ছিলাম। সুযোগ পেলেই আশপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখতাম। কখনো কখনো সাজ্জাদ ভাই সাথে থাকতেন। একবার বললেন, ‘ইচ্ছে করছে বিয়ে করে এখানেই থেকে যাই। খুব ভালো লাগছে জায়গাটা! ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছে না।’
আমি চেতনে-অবচেতনে মুখের দিকে তাকাতাম। কি যে ভালোলাগতো! মায়াভরা মুখ। মুগ্ধ করা চাউনি। অমায়িক হাসি। সবকিছুতেই নিবিড় আকর্ষণ অনুভব করতাম। তিনদিন পর গন্তব্যে যাওয়ার পালা। বিছানাপত্র গুছিয়ে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে আসলাম মসজিদ থেকে। সাজ্জাদ ভাই কিছুটা পথ এগিয়ে দিলেন। একা একা হেঁটে যাচ্ছি ট্রলার ঘাটের দিকে। একবার পিছু ফিরে তাকালাম। আবার হাঁটতে লাগলাম সামনের দিকে। আমার অন্তরের চোখ যেনো পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকেই অবলোকন করছে বারবার।
অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেছে মাঝখানে। ভুলে যাইনি। ভুলে যাবো না। ভুলতে পারবো না। কিছু মানুষের ভালোবাসার মধুরতা আমাকে আচ্ছন্ন রেখেছে। রাখবে আজীবন। কোথায় আছেন? কিভাবে  আছেন? জানি না! হয়তো জানতেও পারবো না কোনোদিন! সারাজীবনের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সংযোগ। হৃদয়ের গভীর সমুদ্রে প্রভাতী আলোর ঝিকিমিকির মতো আজও মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন, ছড়িয়েই যাচ্ছেন প্রিয় সাজ্জাদ ভাই।
তরিনো
ইতালি
১৯-০৫-২০২১


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর