জিন ব্যাংকও আসলে একধরনের ব্যাংক যেখানে মাইনাস (-২০) ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচন্ড ঠান্ডা থাকে😱 শুধুমাত্র টিশার্ট পরে আমি একবার জিন ব্যাংকে ১ মিনিট ০২ সেকেন্ড অবস্থান করতে সক্ষম হই। তবে প্রচলিত ব্যাংকের মতো টাকাপয়সা সংরক্ষণ বা গচ্ছিত রাখে না এই ব্যাংক। এটি আসলে জেনেটিক তথ্য ব্যাংক।
এখানে সংরক্ষিত হয় জেনেটিক তথ্য বা দেশের ভূ-সম্ভূত (Land Race) প্রাকৃতিক বীজ সম্পদ। যদি কোনো কারণে মাঠ থেকে কোনো শস্য বা জাত হারিয়ে যায়, তাহলে জিন ব্যাংকে রক্ষিত নমুনা থেকে তা ফিরে পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীদের গবেষণার প্রয়োজন অনুযায়ী, এসব জাত ব্যবহার ও আদান-প্রদান করা হয়। এ ছাড়া নতুন জাত উদ্ভাবনে এসব জাতের বৈশিষ্ট্য নেওয়া হয় বলেই হয়তো এই সংরক্ষণাগারের নাম জিন ব্যাংক। যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উফশী (উচ্চফলনশীল) জাত এসেছে ঠিকই কিন্তু হারিয়ে যায়নি দেশের ভূ-সম্ভূত প্রাকৃতিক দেশি জাতগুলো।
কবি জসীমউদ্দীনের আমার বাড়ি কবিতায় কবি লিখেছিলেন: ‘আমার বাড়ি যাইও ভ্রমর, বসতে দেব পিঁড়ে, জলপান যে করতে দেব, শালি ধানের চিঁড়ে। শালি ধানের চিঁড়ে দেব, বিন্নি ধানের খই। বাড়ির গাছের কবরী কলা, গামছা-বাঁধা দই।’ আমাদের দেশি ধানের জাতবৈচিত্র্য সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যায় এই কবিতা থেকে। ধান ছাড়াও কৃষিমন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৩৮টি ফসলের ১৮ হাজার ১২৯টি শস্য জিন মজুত আছে। অন্যান্য ফসলের মধ্যে খাদ্যশস্যের ১ হাজার ৭২৭, ডালজাতীয় ফসলের ৩ হাজার ৪৬০, তেলজাতীয় ফসলের ৪৫৫, সবজির ৩ হাজার ৯০২, মসলার ১৯৯, ফলের ১৭০, রুট অ্যান্ড টিউবারের ৯২, আঁশজাতীয় শস্যের ৬০টি জিন মজুত রয়েছে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে ২০টি মেডিসিনাল ও অ্যারোমেটিক উদ্ভিদজাত শস্যের জিন রয়েছে।