কে,এম,তোফাজ্জেল হোসেন জুয়েল ( সাভার প্রতিনিধি):- চোখ ওঠা রোগে ছেয়ে গেছে জনবহুল সাভার। প্রতিটি ঘরে ঘরে পরিচিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে শিশুসহ পূর্ণবয়স্করা। এতে করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় চোখের বিভিন্ন ড্রপের সংকট দেখা দিয়েছে চরমে।
বেশির ভাগ ফার্মেসিতে পাওয়া যাচ্ছে না এই রোগের প্রতিষেধক। ফার্মেসি ব্যবসায়ীদের দাবি এসব প্রতিষেধকের চাহিদা বাড়ায় সাপ্লাই কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো।জানা যায়, চোখ ওঠা এই রোগের আসল নাম কনজাংটিভাইটিস। চোখের কনজাংটিভা নামক একটি পর্দা রয়েছে। এই পর্দার প্রদাহই মূলত চোখ ওঠা রোগ। চোখ ওঠা রোগ ভাইরাসজনিত এবং ছোঁয়াচেও বটে। এই রোগ সাধারণত চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। তবে চিকিৎসকরা এই রোগে এন্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আর এ কারণেই চোখের সকল ড্রপ উধাও।
বুধবার (১১ অক্টোবর) সাভার ও আশুলিয়ার একাধিক মার্কেটের বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে দেখা যায়, চোখের কোনো ড্রপ অধিকাংশ ফার্মেসিতেই নেই। প্রায় প্রতিটি ফার্মেসিতে চোখের ড্রপের কথা বলতেই নাই বলে জানিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন চশমার দোকানেও কালো চশমা পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন একাধিক চোখ ওঠা রোগী।
চোখ ওঠা রোগী নিছার উদ্দিন বলেন, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চোখের ড্রপ কিনতে নবীনগর, পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল ও জামগড়াসহ বিভিন্ন প্রায় সকল ফার্মেসিতে খোঁজ করেছি। একটি ড্রপও পাইনি। এমনকি কালো চশমা কেনার জন্য চশমার দোকানে গিয়ে পাইনি। সকল চশমা বিক্রি হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে সাদা গ্লাসের চশমাই কিনেছি।
অপর রোগী মনির হোসেন বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে আমার চোখ উঠেছে। প্রায় ২ দিন পর আমি একটি চোখের ড্রপ পেয়েছি। ফার্মেসি ব্যবসায়ী পরিচিত বিধায় দুই দিনে সংগ্রহ করে দিয়েছেন।
নামা গেন্ডা পাগ্লা আবেদ আলী মার্কেটের ফার্মেসি মালিক মহসিন বলেন, আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি চোখের ড্রপ ফার্মেসিতে রাখার জন্য। তবে নিয়মিত পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় সব কোম্পানি চোখের ড্রপ পর্যাপ্ত সরবারাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। আমরা ৪ দিন অর্ডার করলে ১ দিন পাচ্ছি, তাও পরিমাণে কম।
অপর ফার্মেসি ব্যবসায়ী সাভার ব্যংক টাউনের সোহেল বলেন, আমরা ছোট ছোট বিভিন্ন দোকানে পাইকারিতেও ওষুধ বিক্রি করি। সব ব্যবসায়ীদের চোখের ড্রপের চাহিদা বেড়েছে কয়েক গুণ। প্রথমদিকে যা ছিল সবাইকে দিয়েছি, খুচরা বিক্রি করেছি। কিন্তু পরে কোনো কোম্পানি আর পর্যাপ্ত চোখের ড্রপ সরবরাহ করতে পারেনি। ফলে সংকট দেখা দিয়েছে সকল ধরনের চোখের ড্রপের। মাঝে মধ্যে দুই একটি কোম্পানি সরবরাহ করছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগণ্য।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, এটি চোখের কনজাংটিভাইটিস রোগ। যা এক প্রকার ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। এটি ছোঁয়াচে রোগ। আক্রান্ত রোগীর তোয়ালে বা গামছা সুস্থ কারও ব্যবহার করা যাবে না। আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে গেলে হাত না ধুয়ে চোখে হাত দেওয়া যাবে না। এছাড়া ওষুধ সংকটের বিষয়টি আমরা শুনেছি। এটা নিয়ে ওষুধ প্রশাসন কাজ করবেন।