নবধারার হোমিওপ্যাথি ডা. শ্যামল কুমার দাসের গো ব্যাক থিওরী-পর্ব ২
ডা. খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন
প্রিয় হোমিওমোদী বন্ধুরা, ইতিপূর্বে আমরা গো-ব্যাক প্রসিডিউর অব রিয়েল হোমিওপ্যাথির নবতর পদ্ধতি সম্পর্কে প্রথম পর্বের একটি ভূমিকা আলোচনা বাংলাদেশ ভূমি ডটকমে প্রকাশ করেছি। সেই পর্বটি প্রচারের পর আপনাদের অভূতপূর্ব সাড়া লক্ষ্য করেছি এবং সেখানে এও বলেছি যে, এই নবধারার তথ্যগুলি আমরা প্রবন্ধ আকারে আলোচনায় অবতীর্ণ না হয়ে মূলত প্রশ্নত্তোর পদ্ধতিকে অনুস্মরণ করে উপস্থাপন করব। যেনো খুব সহজেই আপনাদের মনে উদিত জিজ্ঞাসার উত্তরগুলো পেয়ে তৃপ্তিলাভে সক্ষম হতে পারেন। তাহলে বেশি কথা না বাড়িয়ে চলুন সরাসরি আমরা জিজ্ঞাসা-উত্তরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি।
প্রশ্নঃ ০১. গো-ব্যাক প্রসিডিউর অব রিয়েল হোমিওপ্যাথি কাকে বলে ?
আমার অভিমত, এটি এমন একটি পদ্ধতি যা দ্বারা চিকিৎসক চিকিৎসা করাতে আসা মানুষটির জীবন দর্শন, শিশুকাল থেকে শুরু করে বর্তমান বয়স পর্যন্ত সময়কালে আচার আচরণ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, বংশগত ত্রæটি( পিতা-মাতার এবং পিতার কূল ও মাতার কূল) অনুসন্ধানের মাধ্যমে ট্রু-ডিজিজ তত্ত¡-তালাশ করে রোগীলীপি তৈরী করে নির্দিষ্ট ১০টি হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের সাহয্যে ৬টি সাইকেল অনুস্মরণের মাধ্যমে চিকিৎসার যে নবতর পদ্ধতি ডা. শ্যামল কুমার দাশ আবিষ্কার করেছেন তাকে গো-ব্যাক প্রসিডিউর অব রিয়েল হোমিওপ্যাথি হিসেবে অবহিত করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ.০২ . গো-ব্যাক প্রসিডিউর অব রিয়েল হোমিওপ্যাথি কত সালে আত্মপ্রকাশ করেছে?
উত্তরঃ ১১ মার্চ ২০১১ সাল থেকে।
প্রশ্নঃ ০৩। হোমিওপ্যাথিতে সর্বমোট কতগুলি মেডিসিন রয়েছে?
উত্তর ঃ অনুসন্ধান করে জানা গেছে, হোমিওপ্যাথিতে সর্বসাক‚ল্যে ৭৭০০টির অধিক মেডিসিন রয়েছে।
প্রশ্ন ঃ ০৪ \ ক্রিয়াগত দিক থেকে হোমিওপ্যাথি মেডিসিন কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর ঃ ক্রিয়াগত দিক থেকে তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন-
ক. সুপারফিসিয়াল মেডিসিন বা অগভীর ক্রিয়াশীল মেডিসিন।
খ. ডিপ এক্টিং বা গভীর ক্রিয়াশীল মেডিসিন।
গ. ভেরি ভেরি ডিপ এ্যাক্টিং এবং লং এ্যাক্টিং এন্টিমায়াজমেটিক বা সুগভীর ক্রিয়াশীল মেডিসিন।
প্রশ্ন ০৫\ ডাঃ শ্যামল কুমার দাশ স্যারের নবতর গবেষণায় কতটি মেডিসিন এর ব্যাবহার করে থাকেন সেগুলির নাম লেখো?
উত্তরঃ- ডাঃ শ্যামল কুমার দাশ স্যারের নবতর গবেষণায় সর্বমোট দশটি মেডিসিন ব্যবহার করে থাকেন। নি¤েœ সেই মেডিসিন গুলির নাম লেখা হলো।
১. কার্বোভেজ
২. কার্বো এনিমেলিস
৩. হাইড্রোফোবিণাম বা লাইসিন
৪. ব্যাসিলিনাম (ইধপযরষরহঁস)
৫. টিউবারকুলিনাম বোভিনাম
৬. ড্রসেরা
৭. সিফিলিনাম
৮. মেডোহ্রিনাম
৯. থুজা অক্সিডেন্টালিস
১০. সোরিনাম
প্রশ্ন: ০৬\ উপরোক্ত দশটি মেডিসিন আসলে কী ধরণের ক্রিয়াশীল হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে?
উত্তরঃ উপরোক্ত দশটি মেডিসিন আসলে ভেরি ভেরি ডিপ এ্যাক্টিং এবং লং এ্যাক্টিং এন্টিমায়াজমেটিক বা সুগভীর ক্রিয়শীল মেডিসিন।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিকল্প পদ্ধতি হোমিওপ্যাথি আবিষ্কারের পর থেকেই বহু মনিষী গবেষণা করে আসছেন। আর এই গবেষণা প্রক্রিয়াতো একটি চলমান ও অনন্ত প্রক্রিয়া। এটি অনেকটা প্রবাহমানধারার মতো। কারণ, একটি কথা সকলেই জানেন যে, প্রয়োজনই মানুষের আবিষ্কারের পথ দেখিয়ে দেয়।
প্রশ্নঃ০৭\ ট্রু-ডিজিজ (ঞৎঁব ফরংবধংবং) কাকে বলে? ট্রু-ডিজিজ এর নাম গুলি লিখুন। ট্রু ডিজিজ এবং রেজাল্টস অব দা ডিজিজ এর পার্থক্যগুলি উদাহরণসহ বুঝিয়ে দিন?
উত্তরঃ অল মায়াজম আর ট্রু ডিজিজ ( অষষ সরধংসং ধৎব ঃৎঁব ফরংবধংবং) অর্থাৎ সবগুলি মায়াজমই প্রকৃত রোগ। ( কেন্ট ফিলোসফি)
ট্রু ডিজিজ (ঞৎঁব ফরংবধংবং) এর নাম গুলি নিম্ন রুপ।
১) সোরিক মায়াজম
২) সিফিলিটিক মায়াজম
৩) সাইকোটিক মায়াজম
৪) টিউবারকুলার ডায়াথিসিস(টিডি)
৫) পোস্ট ট্রমা সিনড্রম( পিটিএস)
৬) পোস্ট র্যাবিশ সিনড্রম (পিআরএস)
একটি কথা অবশ্যই মনে রাখা দরকার যে, উল্লেখিত ট্রু ডিজিজ ব্যাতিত অন্যান্য সকল পুস্তকাদিতে যে সকল রোগ বা ডিজিজ এর নাম লেখা হয়েছে, সেগুলির সবই রেজাল্ট অব দা ডিজিজ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আমরা এখানে ট্রু ডিজিজ আর রেজাল্ট অব দা ডিজিজ এর মধ্যেকার পার্থক্যগুলি উল্লেখ করবো।
ক্স ট্রু ডিজিজ এবং রেজাল্ট অব দা ডিজিজ এর পার্থক্যগুলি নিম্নরুপ:
১) ট্রু ডিজিজগুলি বংশগতির মাধ্যমে পূর্বপুরুষ থেকে পরবর্তি প্রজন্মে জিন এর মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে।
এবং
ভাইটাল ফোর্স এ চাপ প্রয়োগ হলে ট্রু ডিজিজগুলি প্রকট হয়। তখন রেজাল্ট অব দা ডিজিজ প্রকাশ পেতে শুরু করে।
২) ভাইটাল ফোর্সে চাপ প্রয়োগ না হলে ট্রু ডিজিজ প্রচ্ছন্ন অবস্থায় অবস্থান করে।
এবং
ট্রু ডিজিজ প্রচ্ছন্ন অবস্থায় থাকলে রেজাল্ট অব দা ডিজিজ এর কোন অস্তিত্ব বোঝা যায় না।
৩) রিয়েল হোমিওপ্যাথির নিয়ম মেনে ট্রু ডিজিজ এর চিকিৎসা হলে ভাইটাল ফোর্স হেলদি হয়।
এবং
ভাইটাল ফোর্স হেলদি হলে রেজাল্ট অব দা ডিজিজ এর চিকিৎসার কোন প্রয়োজন হয় না।
৪) রিয়েল হোমিওপ্যাথি দ্বারা চিকিৎসা না হলে যে কোন স্বাস্থ্যবান মানুষের মধ্যে ট্রু ডিজিজ প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।
এবং
ট্রু ডিজিজ প্রকট হলে যে কোন রেজাল্ট অব দা ডিজিজ দেখা দিতে পারে। এই ভাবে কোন রেজাল্ট অব দা ডিজিজের চিকিৎসা করা হলে সেটির লক্ষণ অন্তরীণ হবার পর আরেকটি রেজাল্ট অব দা ডিজিজ দেখা দিতে পারে। এইভাবে রেজাল্ট অব দা ডিজিজ এর চিকিৎসা করতে করতে ভাইটাল ফোর্স এবং ইমিউনিটি সিস্টেমই ডিসঅর্ডাড হতে থাকে। এবং ধীরে ধীরে জটিল অবস্থার দিকে এগিয়ে যায়। যার পরিণতি ভয়াবহ হয়।
৫) রিয়েল হোমিওপ্যাথির নিয়ম মেনে বা ট্রু ডিজিজ এর চিকিৎসা না হলে যে কোন মানুষই পেশেন্ট হয়ে যেতে পারে।
এবং
রেজাল্ট অব দা ডিজিজ এর চিকিৎসার ফলে আজ কোন মানুষ আপাত সুস্থ হলেও পরক্ষণেই অন্য কোন রেজাল্ট অব দা ডিজিজ শুরু হতে পারে।
যেমন : এক দম্পতি খুবই হাসিখুশি গল্প করছিলো। হঠাৎ স্বামীর একটি খারাপ মন্তব্যে স্ত্রী খুব রেগে গেলো। তার পরক্ষণেরই প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু হলো ফলে ডাক্তার ডাকা হলো তিনি এসেই পেইন কিলার জাতীয় ইনজেকশন পুশ করলেন ফলে সে ঘুমিয়ে গেলো। অর্থাৎ ডাক্তার বাবু মূলত এসেছিলেন মাথা ব্যাথার চিকিৎসা করতে এবং তিনি দিলেনও পেইন কিলার কিন্তু রোগীকে ঘুমোতে হলো। আবার দেখা যায়, রোগীর গায়ে আঁচিল ছিলো । ডাক্তার বাবু আঁচিল গুলিকে কেট ফেলে দিলেন, আপাদদৃষ্টিতে মনে হলো আঁচিল সমস্যা সমাধান হলো কিন্তু রোগীর সাইকোসিস মায়াজম প্রকাটাকার ধারণ করলো ফলে তার মেজাজের পরিবর্তন পরিলক্ষিত হতে শুরু করলো।
৬) ট্রু ডিজিজ মাত্র ৬ টি।
এবং
রেজাল্ট অব দা ডিজিজ অসংখ্য।
প্রশ্নঃ ০৮\ রিয়েল হোমিওপ্যাথির নিয়ম মেনে চিকিৎসা করতে কত প্রকার প্রেসকিপশন করা হয়ে থাকে? সেগুলো কি কি?
উত্তরঃ রিয়েল হোমিওপ্যাথির নিয়ম মেনে চিকিৎসা করতে ৩ প্রকার প্রেসকিপশন করা হয়ে থাকে।
ক. প্যাথলজিক্যাল প্রেসকিপশন
এটি করা হয় পাস্ট হিস্ট্রি এবং পারিবারিক ইতিহাস থেকে পাওয়া তথ্যেও ভিত্তিতে। এই ইতিহাস থেকে অনুসনন্ধান করা হয় পিটিএস, পিআরএস এবং পিটিডি অর্থ্যাৎ প্রিডোমিন্যান্ট টিউবার কুলার ডায়াথিসিস কে। এ্ি তথ্যগুলি সঠিক বিচার ও বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কোনটির গুরুত্ব সব থেকে বেশি অর্থাৎ প্রথম চক্রে কোনটি ২য় চক্রে কোনটি এবং ৩য় চক্রে কোনটিকে রাখা হবে।
খ. ফিলোসফিক্যাল প্রেশকিপশন
এই ধরণের প্রেশকিপশনের জন্য শৈশবের জীবন দর্শন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতেই হবে। এটির প্রয়োজন হয় প্যাথলজিক্যাল প্রেসকিপশনের পর অর্থাৎ সাধারণত এটির স্থান হয় ৪র্থ চক্রে। তবে ক্ষেত্র বিশেষ ২য় বা ৩য় চক্রেও রাখতে হতে পারে।
গ.প্যাথ-ফিলোসফিক্যাল প্রেসকিপশন
এ ধরণের প্রেসকিপশন প্রকৃতপক্ষে ফিলোসফিক্যাল প্রেসকিপশন। তবে এটি স্ট্রং প্যাথলজির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
প্রিয় পাঠক আজকের মতো এখানেই থামছি । পরবর্তি পর্বে আমরা আরো নতুন নতুন তথ্য নিয়ে হাজির হবো। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। থাকুন নিরাপদ। বাংলাদেশ ভ‚মি ডটকমের সাথেই থাকুন।
ধন্যবাদ । ভালো লাগলো লেখাটি
ডাঃ শ্যামল কুমার দাসের বই গুলি অনলাইনে দেয়া যাবি কি
কিছু বই দেওয়া যাবে। সব আমার কাছে নেই।
01750495820