কুষ্টিয়ার খোকসায় একঝাঁক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী সাময়িক বহিষ্কার
সঞ্জয় বিশ্বাস
৪র্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এবং ও বিদ্রোহী প্রার্থীকে সমর্থন করায়, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার একঝাঁক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর ১৪ জন প্রার্থী ও দুজন সমর্থনকারীকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার ও সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম একটি চিঠি পাঠায়। উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত না মেনে বহিষ্কার হওয়া এসব নেতা-কর্মী বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়ছেন এবং কেউ কেউ এদের সমর্থনও করেছেন। তবে এ সকল বিদ্রোহী প্রার্থী এবং সমর্থনকারীদের নির্বাচনে অংশ না নিতে বেশ কয়েকবার অনুরোধ করা হয়েছিল দলের পক্ষ থেকে। তবে তারা দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনী মাঠ দখল করে আছে। তাই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের স্থায়ী বহিষ্কার করার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এব্যাপারে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের নির্দেশনা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ দেবে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর খোকসার আটটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনে ৪০ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বহিষ্কার হচ্ছেন কোন নেতা-কর্মী- খোকসা ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বিশ্বাস, দলীয় মনোনয়ন হিসেবে আওয়ামী লীগ কর্তৃক সুপারিশকৃত আবুল কালাম আজাদ এবং খোকসা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুকুল। জানিপুর ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবর রহমান ও সদস্য নজরুল ইসলাম। শিমুলিয়া ইউনিয়ন থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আব্দুল কুদ্দুস। শোমসপুর ইউয়নিয়ন থেকে উপজেলা যুবলীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম মুকুল। জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়ন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দল থেকে সুপারিশকৃত মহ. আব্দুস শকীব খাঁন টিপু ও মো. আরিফুল ইসলাম নয়ন। গোপগ্রাম ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ফারুক। আমবাড়িয়া ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান খাঁন, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আমিনুর রহমান খান, নাজমুস সালেহিন এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি আকমল হোসেন। এছাড়াও বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থক ও প্রস্তাবকারী হওয়ায় জানিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সন্তোষ কুমার ঘোষ এবং শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস। তবে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা এখনো বহিষ্কারের কোন চিঠি পাননি। বিষয়টি শুনেছেন। গোপগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ফারুক বলেন, আমি শৈশব থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দল করি মানুষের জন্য। তাঁদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার জন্য। এবারের ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে জনগণের চাপে প্রার্থী হয়েছি। বিদ্রোহী প্রার্থীদের অভিযোগ, এবারে ইউপি নির্বাচনে দল থেকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশেরই জনপ্রিয়তা নেই। জনগণের সাথে নেই সম্পৃক্ততা। তবুও তারা মনোনয়ন পেয়েছেন। জনগণ তাদের প্রত্যাখান করেছে। ভোটের মাঠে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে বলেও জানান বিদ্রোহী প্রার্থীরা।