যৌন হয়রানির অভিযোগে নিউ ইয়র্কের কুইন্সের পাঁচ নারী নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি চিকিৎসক ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।
কুইন্স সুপ্রিম কোর্টে করা মামলার অভিযোগ বলা হয়েছে, গত দুই দশক ধরে ডা. ফেরদৌস খন্দকার রোগীর দেখার সময় ‘অকারণে’ নারীদের যৌন হয়রানি করছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে পাঁচ নারী অভিযোগ করেছেন, ‘ডাক্তার ফেরদৌস খন্দকার চেম্বারে তাদের আটকে রেখে মানসিক যন্ত্রনা দিয়েছেন।’
তারা অভিযোগ করেছেন, কিশোরী রোগীরাও তার যৌন হয়রানি থেকে রেহাই পাননি।
ক্ষতিপূরণ দাবির পাশাপাশি নারীরা চিকিৎসার অপব্যবহারের অভিযোগে চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেছেন।
যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে বেশকজন নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হলে ডা. ফেরদৌস তিনজনের বিরুদ্ধে ১০ লাখ ডলারের মানহানির মামলা করেন।
আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন এবং বিবাদির আইনজীবীর পারিশ্রমিক পরিশোধ করার জন্য ফেরদৌস খন্দকারকে নির্দেশ দেয়।
ওই পাঁচ নারীর প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী সুসান ক্রুমিলার বলেন, মানহানির মামলা করার জন্য ডা.ফেরদৌসকে বাকি জীবন অনুশোচনা করে যেতে হবে। খন্দকার মনে করেছিলেন, তিনি মামলা করলে তার হয়রানির শিকার নারীরা চুপসে যাবেন। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়েছে। অবমাননার শিকার অন্যান্য নারীরাও এখন এগিয়ে এসেছেন।
কয়েক মাস আগে নিউ ইয়র্কের ২৩ বছর বয়সী এক নারী ডা. ফেরদৌসের চেম্বারে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে গেলে সেখানে ‘যৌন হয়রানির শিকার হন’ বলে অভিযোগ আনেন। পরে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নিগ্রহের’ কথা জানান।
তার ওই পোস্টের পর আরও ক’জন নারী একই অভিযোগে সরব হন।
পরে ডা. ফেরদৌসের মেডিকেল সনদ বাতিলের আহ্বান জানিয়ে তারা চেঞ্জ.অর্গ পিটিশন করেন, যাতে সাড়ে চার হাজারের বেশি লোক স্বাক্ষর করেন।
‘নিগ্রহের’ অভিযোগ আনা একজন নারী সাংবাদিকদের বলেন, ওই ঘটনা কয়েক দিন পর্যন্ত আমার কাছে দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমার বয়স ছিল খুবই কম। কিভাবে বলতে হবে, বুঝতে পারছিলাম না। আবার আমি একেবারে অজ্ঞও ছিলাম না। আমি জানতাম, এভাবে কোনো চিকিৎসক কাউকে পরীক্ষা করে না। আমি বুঝতে পারছিলাম, আমার সাথে কিছু একটা হয়েছে। ওই সময় আমার কথাগুলো শেয়ার করতে প্রস্তুত ছিলাম না।
তার বিরুদ্ধে নারীদের এমন অভিযোগের খবর নিউ ইয়র্কের পত্রিকা দ্য সিটি, জ্যাকসন হাইটস পোস্ট এবং কমিউনিটির বাংলা ভাষার পত্রিকা সাপ্তাহিক নবযুগ এবং আজকালে প্রকাশিত হয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, ‘এই নিউজটি কী করতেই হবে? বিষয়টি অনেক পুরনো। বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে আবার সামনে আনা হয়েছে।’