সামান্য বৃষ্টি হলেই ফরিদপুরের সালথা উপজেলা সদরের সালথা বাজারের অলিগলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সংস্কার আর সচেতনার অভাবে কয়েক বছর ধরে সদরের প্রধান এই বাজারের ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে গিয়ে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে রয়েছে। একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে বাজার ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি বাজারে আসা ক্রেতাদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বাজার থেকে প্রতিবছর প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে সরকার। তারপরেও বাজার উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।
এমন পরিস্থিতিতে বাজারের ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জোর দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভোগি ব্যবসায়ীরা। সরেজমিনে সালথা বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা বাজার, মাছ বাজার, পেঁয়াজ বাজার ও পাট বাজারের গলিসহ প্রতিটি অলিগলির ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই লাজুক। হাটের দিন বাজারের ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে ড্রেনের ভিতর পঁচা মাছ-সবজি ও পঁচা খাবারসহ ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। আর সেই ময়লা-আবর্জনার উপর বা পাশে দাঁড়িয়ে প্রসাব করছে অনেকে। ফলে ড্রেনগুলো ভরে গেছে।
ড্রেনের পাশ দিয়ে চলাচল করতে গেলেই দম বন্ধ হয়ে আসে পঁচা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে। বাজারের ব্যবসায়ী হায়দার আলী, হাবিবুর রহমান, সোলাইমান মোল্যা, মারুফ হোসেন ও শফিকুল ইসলাম বলেন, সালথা বাজারে সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার ও রবিবার হাট বসে। কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে ড্রেনগুলো নোংরা ময়লা-আবর্জনায় ভরে গিয়ে পানি নিশস্কান ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় সামন্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে বাজারের অলিগলি জনগণের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে পঁচা আবর্জনা বৃষ্টির পানিতে মিসে দূর্গন্ধ হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এতে বাজারে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের শরীরে রোগ জীবাণু ছড়াচ্ছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নষ্ট। নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিউবওয়েল ও ল্যাটিন। বাজারের কমিটি আছে।
প্রতিবছর বাজার থেকে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে সরকার। অথচ কয়েক বছর ধরে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা ও জনগণের নেই কোনো নাগরিক সুবিধা। আমরা বিষয়টি বাজার কমিটিকে অনেকবার অবগত করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। বর্ষা মৌসুমে এবারও বৃষ্টির শুরু হয়েছে।
বৃষ্টিতে বাজারের যে পরিস্থিতি হয় তাতে দ্রæত ড্রেন সংস্কার না করা হলে ব্যবসা করা অসম্ভব হয়ে যাবে। সালথা বাজার কমিটির সভাপতি ফারুকুজ্জামান ফকির মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাচ্চু মোল্যা বলেন, মাছ বাজার ও কাঁচা বাজারে একটি ড্রেন ছিল। বাজারের মধ্যে দিয়ে মহাসড়কের কাজ করার সময় ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া আর্সেনিকমুক্ত টিউবওয়েল নেই, বাজারে প্রায় ৫০০ ব্যবসায়ীর জন্য একটি মাত্র টয়লেট। তাও খুব খারাপ। বাজারের উন্নয়নে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে স্কিম দিয়েছি। তারা শুধু আশ্বাস দেয়। কিন্ত বাস্তবে কিছু করে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ হাসিব সরকার বলেন, জলাবদ্ধতা সৃষ্টির বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর কমিটির সদস্যদের নিয়ে একাধিকবার সালথা বাজার পরিদর্শন করেছি। তবে বাজারের এমনি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ব্যবসায়ী ও জনগনের অসচেনতার কারণে। প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ড্রেনগুলো ভরে রাখেন তারা। এ জন্য মূলত পানি নিষ্কাশন সমস্যা হয়। সবাই যদি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলে তাহলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির আশঙ্কা কমে যাবে। বাজারের উন্নয়নের জন্য কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যার মাধ্যমে দ্রুত জলাবদ্ধতার ভোগান্তী নিরসন হবে।