শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
মিঠাপুকুরে শাড়ী পেচিয়ে এক মহিলার আত্ম হত্যা পাংশায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত মৃত্যুর আগে ওয়াশরুম থেকে কবি হেলাল হাফিজের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ অনন্তলোকের চিরন্তন সফরে কবি হেলাল হাফিজ পাংশায় পুলিশকে দেখে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পালানো আসামী গ্রেফতার ক্ষমা চাইলেন মুফতি আমীর হামযা আশা জাগিয়ে রাখি পাংশায় আগুনে পুড়ে ছাই হলো ৪টি ঘর খোকসায় আ.লীগ নেতাদের ছাড়াতে বিএনপির হাইব্রীড নেতাদের তদবিরে জনমনে প্রশ্ন  খোকসায় আওয়ামীলীগ নেতা আটক, ছাড়িয়ে নিতে কৃষকদল নেতার তদবীর রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত কবি রফিকুল্লাহ কালবী : সাক্ষাৎকার পাংশায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী, কেক কাটা ও আলোচনা সভা কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ বৈঠকে আমীরে জামায়াত ক্লাসে বিশ্বনবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

ঝিনাইদহের একটি গ্রামে কোন মানুষ থাকেনা- পড়ে আছে সবই

বাংলাদেশ ভূমি ডটকম: / ৪৯১ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১, ৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ ভূমি ডটকম

দেশের আর দশটা গ্রামের মতোই এখানে আছে ঘরবাড়ি, পুকুর ও ক্ষেত ভরা ফসল। তবে সেগুলো খাওয়ার জন্য কিংবা বাড়িতে থাকার জন্য মানুষ নেই এখানে। এই কথাটি শুনে অবাক হবেন যে কেউ। তবে আপনাদের মনে হতে পারে, কোনো হরর সিনেমার দৃশ্যপট ব্যাখ্যা করছি।না তা ঠিক নয়। আবার ভিনদেশি কোনো দ্বীপও নয় এটি। বাংলাদেশেই রয়েছে এমন একটি গ্রাম। যেই গ্রামে প্রায় শত বছর ধরে কোনো মানুষ বসত করেনা।  গ্রামটির নাম মঙ্গলপুর। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নে রয়েছে এই গ্রামটি।।

সরকারি নথিতে গ্রামটির সুস্পষ্ট অস্তিত্বও রয়েছে। আছে ফসলি জমি, পুকুর ও সবুজ বৃক্ষ। নেই শুধু মানুষের কোলাহল।

জনশ্রুতি আছে,  বহুবছর পূর্বে মঙ্গলপুর গ্রামের মানুষের মধ্যে ‘অমঙ্গল’ আতঙ্ক ভর করেছিলো। তখন ত্রাসে গ্রাম ছেড়ে চলে যায় মানুষ। সেই থেকে গ্রামটি মানুষশূন্য। এখনো গ্রামজুড়ে রয়েছে ধান, মসুরি, আঁখসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত এবং ফলের বাগান। রয়েছে বেশ কয়েকটি বসতভিটার ধ্বংসাবশেষ, বেশ কিছু পুকুরও। যা প্রমাণ করে এককালে এখানে মানুষের বাস ছিল খুব ভালো ভাবেই। তবে কেন এখানে কেউ বাস করে না? এমন প্রশ্ন আপনার মনেও নিশ্চয় জেগে উঠছে বারবার। চলুন জেনে নেয়া যাক এর নেপথ্যের কাহিনী-

এখানে এখনো রয়েছে ফসলের মাঠ, ফলের বাগান

এখানে এখনো রয়েছে ফসলের মাঠ, ফলের বাগান

এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর এলাকার প্রবীন ব্যক্তি মোশারফ হোসেন জানান, ৮০ থেকে ৯০ বছর পূর্বে মঙ্গলপুর গ্রামে মহামারি আকারে কলেরা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। এতে অনেক মানুষ মারা যান। আতঙ্কে অন্যরা আশপাশের গ্রামে আশ্রয় নেন। কিছু পরিবার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে ভারতে চলে যান।

পার্শ্ববর্তী বলাবাড়িয়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলপুর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের ছিল। গ্রামে যখন কলেরা মহামারি আকার ধারণ করে তখন অনেক মানুষ মারা যান। ওই সময় গ্রামে একটা কথা ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের খাল-বিল, পুকুর-কুয়ার পানি নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে থাকলে সবাইকে মরতে হবে। এই প্রচারের পর গ্রামের মানুষ দল বেঁধে ভারতে চলে যায়। কিছু মানুষ পাশের গ্রামগুলোতে চলে গিয়েছিল, যারা পরে অন্যত্র চলে গেছেন।

এসব অনেক অনেক বছর আগেকার কথা। তবে তারও অনেক পরে, আজ থেকে ৮০-৯০ বছর আগেও হাজরা ঠাকুর, নিপিন ঠাকুররা কয়েকঘর এখানে ছিলেন। তারা মারা যাওয়ার পর সর্বশেষ তাদের পরিবারের নেটো ঠাকুর নামের একজন মঙ্গলপুরে থাকতেন, তিনি পরবর্তীতে খুন হলে গ্রামটি সম্পূর্ণভাবে মানুষশূন্য হয়ে পড়ে।

জানা যায়, এই অঞ্চলে মঙ্গল পাঠান নামের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। তার নামেই পরবর্তীতে গ্রামটির নামকরণ করা হয় মঙ্গলপুর। মঙ্গল পাঠানের তিন একর জমির উপর ছিল বিশাল এক বাড়ি। বাড়ির চারদিকে উঁচু করে ৩০ থেকে ৪০ ইঞ্চি চওড়া মাটির প্রাচীর ছিল। পাশের পুকুরের উঁচু পাড়ে দাঁড়িয়েও বাড়ির ভেতরের কাউকে দেখা যেত না। তার পরিবার ছিল খুবই পর্দাশীল। বাড়ির মেয়েরা কখনো বাইরে বের হতো না। এমনকি বাইরের কোনো পুরুষের সঙ্গে দেখাও দিতেন না। মঙ্গল পাঠান একসময় সেখানেই মারা যান। তার কবর এখনো রয়েছে এই গ্রামে।

এক সময়ের কোলাহলপূর্ণ সেই গ্রাম আজ দেড়শ বছর ধরে পরিত্যক্ত

এক সময়ের কোলাহলপূর্ণ সেই গ্রাম আজ দেড়শ বছর ধরে পরিত্যক্ত

এক সময়ের কোলাহলপূর্ণ গ্রাম কী কারণে এমন মানবশূন্য হয়ে গেল তা ঠিক কেউই বলতে পারে না। আর সময়টাও অনেক বয়ে গেছে। তাই এই প্রজন্মের কেউ এই ব্যাপারে খোঁজও রাখেন না। তবে সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হচ্ছে- এক সময় এখানে কলেরা এবং গুটি বসন্ত দেখা দিলে গ্রামের মানুষ মারা যেতে থাকে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ছিল শিশু। ডাক্তার- কবিরাজ, ওঝা, ওষুধ-ঝাড়ফুঁক কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। গ্রামের মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করে কোনো দৈব শক্তির কারণে এমনটা হচ্ছে। এখানে থাকলে তারা কেউই বাঁচবে না। তাই সবাই সব রেখেই গ্রাম ছেড়ে পালাতে থাকে। পরবর্তীতে তাদের উত্তরসূরিরা এসে তাদের জমি পাশের গ্রামের মানুষের কাছে বিক্রি করে দিয়ে যেন ঝামেলা মুক্ত হয়। তারাই এখন এই সব জমিতে চাষাবাদ করছেন। তবে বসতি গড়েননি কেউ।

এলাঙ্গী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, এলাঙ্গী ইউনিয়নটি ১৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। যার মধ্যে মঙ্গলপুর একটি। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও যশোরের চৌগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী একটি গ্রাম এই মঙ্গলপুর। কিন্তু এই গ্রামে কোনো মানুষ বাস করতো না। তারা লোকমুখে শুনেছেন অজানা আতংকে গ্রামের মানুষগুলো গ্রাম ছেড়ে চলে যান।

তিনি আরো জানান, মানুষশূন্য গ্রামটির কথা বর্তমান প্রজন্মের মানুষ ভুলে গিয়েছিল। যা সংবাদপত্রের মাধ্যমে আবারো সবাই জানতে পেরেছেন। এলাঙ্গী ইউপির ভূমি অফিসের সূত্রানুসারে, মঙ্গলপুর গ্রামটি ৬৬ নম্বর মঙ্গলপুর মৌজায় অবস্থিত। এই মৌজায় একটিই গ্রাম রয়েছে। গ্রামে ২০৬ টি খতিয়ানভুক্ত জমি আছে। কিন্তু কোনো পরিবার নেই।

কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না। একটি গ্রাম মানুষশূন্য হয়ে গেছে কী কারণে তা খুঁজে দেখবেন বলে তিনি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর