হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা যে কারনে রোগীদের প্রেসক্রিপশন দেয় নাঃ-
আজকাল অনেক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরাই রোগীদের প্রেসক্রিপশন না দেওয়ার বিরোধীতা করে। কিন্তু আমার মতে সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের উচিত রোগীকে প্রেসক্রিপশন না দেওয়া।
ধরুন, একজন রোগীর বর্ষা নামলে মাথা ব্যথা শুরু হয়। আপনার কাছে রোগী আসার পর আপনি আরো কিছু লক্ষন মিলিয়ে রোগীকে রাসটক্স 1M দিলেন এবং প্রেসক্রিপশন করে দিলেন। রোগী ঔষধ খেয়ে সুস্থ হয়ে গেলো এবং রোগীর মধ্যে একটি ধারনার সৃষ্টি হলো যে মাথায় ব্যথা হলে হোমিওপ্যাথি ঔষধ রাসটক্স 1M খেতে হয়। রোগী একটা ফার্মেসী থেকে একড্রাম রাসটক্স 1M এ বড়ি কিনে ঘরে রেখে দিল। তো রোগীর কোনো আত্মীয়ের একদিন হঠাৎ করে প্রচন্ড আকারে মাথা ব্যথা শুরু হলো। সে অস্থির হয়ে গেলো আর মনে করতে রাখলো এই মাথা ব্যথার কারনে সে মরেই যাবে। আপনার প্রথম রোগী ভাবলে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেই ৫০০ টাকা ভিজিট সাথে ঔষধের দাম দেওয়া লাগবে। তো সে বুদ্ধিমানি (বোকামি) করে আপনাকে না জানিয়েই রাসটক্স 1M প্রয়োগ করলো। কিন্তু ওই আত্মীয়র মাথা ব্যথা তো কমলোই না বরং কিছু পরিবর্তিত লক্ষন প্রকাশ পেলো। তো রোগ না কমার কারনে রোগী বার বার তাকে রাসটক্সের বড়ি দিতে লাগলো। তারপর আপনার রোগী তার আত্মীয়কে নিয়ে দিশা না পেয়ে আপনার কাছে নিয়ে আসলো। আপনি তার ঔষধ প্রয়োগের তিরস্কার করলেন। কিন্তু পরিবর্তিত লক্ষনের কারনে আপনি আর একোনাইট ধরতে পারলেন না। তখন আপনি রোগীকে ফাইটাম দিলেন। এখন আর আপনার প্রেসক্রিপশন দেওয়ার সুযোগ নাই। কারন ফাইটামের প্রেসক্রিপশন করা যায় না। তারপর আপনি হয়তো রাসটক্সের ক্রিয়াকাল শেষ হওয়ার পর আপনি তাকে একোনাইট প্রয়োগ করলেন। তারপর সেও সুস্থ হলো।
এরকম বিপত্তি যদি মৃত্যুমুখী তরুন রোগ কিংবা চিররোগের চিকিৎসায় ঘটে তাহলে কি হবে বুঝতে পারতেছেন। এখন অনেক রোগীই চর্ম রোগ দেখলে হোমিও ঔষধ গ্রাইফাইটিস খেতে বলে। আচিল দেখলেই থুজা খেতে বলে। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক থিউরী অনুযায়ী একই রোগী ভিন্ন ভিন্ন রোগীর ঔষধ কি এক? কখনোই এক হয় না। তাই রোগীকে প্রেসক্রিপশন নয় সঠিক ঔষধ দিন। এতে চিকিৎসকের সুনাম একবিন্দু পরিমান কমবে না।