বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী আর নেই। সোমবার রাত ১১টার পর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
হাবীবুল্লাহ সিরাজীর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ক্যানসারে আক্রান্ত হাবীবুল্লাহ সিরাজীকে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েক দিন ধরে তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন বলে বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান জানিয়েছেন।
পেশাগত জীবনে প্রকৌশলী হাবীবুল্লাহ সিরাজী লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি একাধারে কবিতা, উপন্যাস ও শিশুসাহিত্য লিখেছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ১৯৭২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ২০১৮ সালে তাঁকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেয় সরকার।
এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে অসুস্থ হয়ে হাবীবুল্লাহ সিরাজী হাসপাতালে ভর্তি হলে তাঁর হার্টে রিং পরানো হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী মো. আবুল কালাম জানিয়েছেন, হাবীবুল্লাহ সিরাজী কোলন ক্যানসারে ভুগছিলেন। পেটে ব্যথা হলে গত ২৫ এপ্রিল তাঁকে শ্যামলীর এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এত দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
হাবীবুল্লাহ সিরাজীর জন্ম ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলায়। ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং বুয়েট থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি।
হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘দাও বৃক্ষ দাও দিন’, ‘মোমশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি’, ‘হাওয়া কলে জোড়াগাড়ি’, ‘নোনা জলে বুনো সংসার’, ‘স্বপ্নহীনতার পক্ষে’, ‘আমার একজনই বন্ধু’, ‘পোশাক বদলের পালা’, ‘প্রেমের কবিতা’, ‘কৃষ্ণ কৃপাণ ও অন্যান্য কবিতা’, ‘সিংহদরজা’, ‘বেদনার চল্লিশ আঙুল’, ‘ম্লান, ম্রিয়মাণ নয়’, ‘বিপ্লব বসত করে ঘরে’, ‘ছিন্নভিন্ন অপরাহ্ণ’, ‘জয় বাংলা বলো রে ভাই’, ‘সারিবদ্ধ জ্যোৎস্না’, ‘সুগন্ধ ময়ূর লো’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘মুখোমুখি: তুচ্ছ’, ‘স্বনির্বাচিত প্রেমের কবিতা’, ‘হ্রী’, ‘কতো আছে জলছত্র’, ‘কতোদূর চেরাপুঞ্জি’, ‘কাদামাখা পা’, ‘ভুলের কোনো শুদ্ধ বানান নেই’, ‘একা ও করুণা’, ‘যমজ প্রণালী’, ‘আমার জ্যামিতি’, ‘পশ্চিমের গুপ্তচর’ ও ‘কবিতাসমগ্র’।