স্মরণ
তোমরা যারা যুদ্ধে গেলে
রক্ত দিলে যারা,
তোমরা যারা শত্রু জ্বেলে
হয়েছ প্রাণহারা;
অনাদিকাল রইবে বেঁচে দেশে;
দেশ বাঁচালে দশকে ভালোবেসে;
আমরা যদি যাই বা ভুলে
তোমাদের সে কর্ম,
অমানুষ সে পশুর কুলে,
জারজ তার মর্ম।
গুণী
বাংলাদেশটি গড়তে সেদিন
গেল কত প্রাণ!
নারীর অযুত সম্ভ্রম ত্যাগে
এলো স্বাধীন-ঘ্রাণ।
ছোট্ট শিশু মায়ের বুকের
দুগ্ধগ্রহণ কালে,
পাকসেনারা মায়ের সামনে
প্রাণটি নেয় অকালে!
সেদিনের সেই ভয়ের কথা
বড়দের মুখে শুনি-
নির্ভীক সেনা মুক্তিযোদ্ধা,
তাঁরাই পরম গুণী।
সবুজ বাংলার রক্তিম ছড়া
সবুজ বাংলা রক্তিম হলো
রক্তস্রোত নদীর জলে,
বাতাসে সেই মড়ার গন্ধ,
গন্ধে যেন অন্তর জ্বলে!
মায়ের বুকের সন্তান নিয়ে
আছড়ে মারে সম্মুখে,
কুরআন পাঠের ইমাম মারে,
হিন্দু মারে খুব রুখে!
পাকিস্তানের পাশবিকতা
যায় কি ভোলা কোনো দিন?
মা-বোনদের ওই নির্যাতন আর
শোধ হবে না মুক্তির ঋণ।
কবি পরিচিতি : জীবনবাদের কবি শ্যামলকুমার সরকার ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই মে মাদারীপুর জেলার চল্বল্ গ্রাম জন্মগ্রহণ করেন। কবি তাঁর কবিতায় মানুষের অস্তিত্ববাদকে সুনিপুণ লেখনশৈলীতে প্রকাশ করে চলছেন; পল্লিপ্রকৃতি ও স্বদেশপ্রেম তাঁর কবিতার আরও একটি উজ্জ্বলতম দিক।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সাফল্য সোনার বাংলায় চিরায়ত হয়ে থাকুক – এ যেন কবির বুকভাঙা প্রত্যাশা।
অত্যন্ত দারিদ্রতার চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে কবির পথচলা। তিনি তাঁর প্রাথমিক-মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক একটি খড়নির্মিত চলাঘরের নিচে থেকেই পড়াশুনো চালিয়েছেন। বসবার জন্য থাকত একটি তুষের বস্তা। তবু সেই চালাঘরখানি ছিল যেন এক বিদ্যামন্দির ! বইয়ের পাটে পাটে সাজানো ছিল সেই পর্ণকুটির। কৈশোরেই কবির কাব্যপ্রতিভার উন্মেষ ঘটলো ; ছন্দাকারে দীর্ঘবক্তব্য দেওয়ার জন্য খুব প্রশংসা কুড়িয়ে ছিলেন কবি।
ইশকুলে পড়াকালীন সময়েই তিনি একজন সু-বাগ্মী ও মননশীল কথক।
২০২২ খ্রি.-এর বইমেলায় শ্যামলকুমার সরকার- এর কাব্যগ্রন্থ ‘জাগৃতির কবিতা’ বের হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যে কবির কবিতা-প্রবন্ধ-ছড়া ও গল্প প্রকাশিত হচ্ছে।
তিনি বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (অধিভুক্ত) সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের বাংলা বিভাগের ছাত্র।