মস্তোফা জামাল জানী
কবিতা-কবিত্ব আশৈশব আর সমাজ ভাবনা যার পালে দিয়েছে উষ্ণ হাওয়া। সে রকম একজন কবি ওছড়াকার মস্তোফা জামাল জানী।
দশক বিচারে শূন্য দশকের সম্ভাবনাময় কবি ও ছড়াকার তিনি। জন্ম ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৮১ সালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের খামা গ্রামে।বাবা নেছার আহমেদ ও মা রোকেয়া বেগম।চার ভাই এর মধ্যে কবি ২য়।বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর, দক্ষিন লতিবাবাদে বসবাস করেন। লেখালেখির শুরুটা সেই কৈশরে।তখনি সম্পাদনা করতেন দেয়াল পত্রিকা ‘ জামফাঁস ‘। এরপর ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা আর কবিতা ছড়ার সাথে কথোপকথন। সাহিত্য চর্চার একনিষ্ঠতায় একান্ত আত্মার গভীরে প্রতিষ্ঠা করেন। ‘ জামফাস সাহিত্য পরিষদ এবং পালন করেন সভাপতির দায়িত্ব। এছাড়া সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন ‘ মুক্তকথা’ সাহিত্যের ছোটকাগজ।ও ‘সরনিকা’। কবির সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে কবি ও ছড়াকার মস্তোফা জামাল জানী বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিল্প, সাহিত্য সংগঠনের সাথে জড়িত।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, জামফাস সাহিত্য পরিষদ,অনুশীলন শিল্প – সাহিত্য সংস্কৃতিক পরিষদ,জেগে ওঠো নরসুন্দা, আজকের দেশ সাহিত্য পরিষদ,চেতনা সামাজিক সংগঠন ও কিশোরগঞ্জ ছড়াকার সংসদ।প্রকৃতির রুপ – বৈচিত্র,স্বদেশপ্রেম,মানবিক মূল্যবোধ, মানব – মানবীর পারস্পারিক সম্পর্ক,প্রেম, দ্রোহ, চেতনা, সমাজ,সচেতনতা ইত্যাদি।তার কবিতা ও ছড়ায় ঘুরে ফিরে আসে। তার লেখা কবিতা ও ছড়ায় যেমন উঠে আসে শিশু কিশোরদের জন্য নির্মল আনন্দরস তেমনি উঠে আসে সমাজবাস্তবতা। সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৩ সালে তাড়াইল সাহিত্য সংসদের পক্ষ থেকে ” মেঠোপথ উদ্দীপনা পদকে ভূষিত হন। ২০ ডিসেম্বর ২০১৩ চান্নিপশর ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হন ।কবি ও ছড়াকার মস্তোফা জামাল জানী পড়াশোনা করেন ( মাস্টার্স) রাষ্টবিজ্ঞান। আনন্দনমোহন বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহ। দেশের বিভিন্ন দৈনিক, সাপ্তাহিক ও লিটল ম্যাগাজিনে তার ছড়া, কবিতা, গল্প নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।
প্রকাশিত যৌথকাব্য গ্রন্থ —
১। কিশোরগঞ্জের নির্বাচিত ছড়া। অমর একুশে গ্রন্থ মেলা–২০১৬
২। শব্দমেঘ – অমর একুশে গ্রন্থ মেলা–২০১৭
৩। জীবনের যত কাব্য– অমর একুশে গ্রন্থ মেলা -২০১৭
৪। গল্পে জীবনের প্রতিছবি –অমর একুশে গ্রন্থ মেলা -২০১৭
—- কিশোরগঞ্জ।
মোবাইল নং–০১৭১৭-৩৫৭৭১৪ । বাংলাদেশ ভূমির পাঠকদের জন্য তার কয়েকটি ছড়া উপস্থাপন করা হলো।
খবিশ – সৎ
কদম আলী
ঝুলছে কেমন
পোস্টারে,
বুকের ভেতর
রাখে চেপে
জোশটারে।
সিদ্ধি বাবুর
হাবুর মতো
চেহারা,
এরাই নাকি
রাজার প্রিয়
বেহারা।
সোনার ছেলে
গড়বে নাকি
ভবিষ্যৎ,
এরাই দেখি
চরিত্রে হয়
খবিশ – সৎ।
হৈ চৈ
তিন্নি খাবে বিন্নি ধানের খৈ
শুচির প্রিয় টক তেঁতুল ও দৈ
জারীফ পড়ে বই
মনি খুজে শিমের বিচি
পুষন গেল কই?
কচির আছে বিড়াল ছানা
সে কথাটি বলতে মানা
সামির প্রিয় মই
সনির আছে ভুল যে অনেক
রিফাত খাবে কৈ।
এসো সবাই খেলব খেলা
আনন্দেতে কাটবে বেলা
করব য়ে হৈ চৈ।
—– —— ——–
সঙখচিল
পুকুর পাড়ে ডালিম গাছে
বুলবুলিটা নাচে,
হাসের ছানা সাঁতার কাটে
মা ছানাটির পাছে।
মনের সুখে সাঁতার কাটে
কত সুখের মেলা,
মাছরাঙাটা ছুঁ মেরে নেয়
মলা পুটি ঢেলা।
হঠাৎ করে কোথা থেকে
আসলো এক চিল,
পুকুর জুড়ে হাসের ছানা
করছে কিল কিল।
হঠাৎ তারা ঝোপের ধারে
চুপটি করে থাকে,
কোথায় আছে শুকুন চিল
রাখে চোখে চেখে।
সুখের মেলায় হামলা দিলো
সঙখ রাজের চিল,
মানুষ নামের সঙখ চিলের
আছে অনেক মিল।।
ঝড়
ঝড় এলো এলোরে
খোকা কই গেলোরে
টুপ টুপ
বৃষ্টিতে ভিজতে
খোকা গেলো
কাঁচা আম খুঁজতে।
ঝরে খোকা
থরথরে কাঁপেরে
হিম আর আরশিনি
তুলো ঝাঁপে ঝাঁপেরে।
বাবা
ন্যায়ের পক্ষে ছিলো বাবার
ভূমিকা খুব শক্ত
তাইতো ছিলো আমার বাবার
অগণিত ভক্ত।
বাবা যখন করতো বসে
বিচার কার্য শুরু
তখন সবার শংকাতে বুক
কাঁপতো দুরুদুরু ।
ন্যায়ের পক্ষে ছিলো বাবা
সাহসী একবীর
দুষ্টু দমন করতে যেনো
অব্যর্থ এক তীর।
এক্কেবারে বুড়ি
পাশের বাড়ির চাকনা
কথা বলে পাকনা
এক্কেবারে বুড়ি,
কেউ যদি ধরে ভুল
লাফ দিয়ে ধরে চুল
হাতে দেয় তুরি।
যারে ধরে ছাড়ে না
লাগলে পরে পারে না
তার পর সে কাঁদে,
সবাই করে আদর
বাড়ছে তার কদর
জাতে বড় পদে।
সোনার বাংলা
কেউ বা থাকে পাঁচ তলায়
কেউ বা কুঁড়ে ঘর,
স্বাধীনতার মানে খুজে
সবই হল পর।
তবুও ওরা এমন করে
স্বপ্ন দেখে রোজ,
অট্রালিকায় থেকেও কেউ
নেয় না তাদের খোঁজ।
রাতের বেলা পূর্ণিমা চাঁদ
দেখে ছাদে বসে,
কারো আকাশ সারা বছর
মাথার উপর ভাসে।
মাথার উপর স্বাধীন আকাশ
বুকের জমিন খাঁ খাঁ,
স্বপ্ন দেখা সোনার বাংলা
রং তুলিতেই আঁকা।
———————–