বর্তমানে বাংলাদেশ অ্যালোপ্যাথিক ওষুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ বললেও ক্ষেত্র বিশেষ তারা ব্যার্থ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে হোমিওপ্যাথিও ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারছে। তবে আমাদের দেশীয় ওষুধ শিল্পে বিপ্লব চলমান রয়েছে। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদন হয় এবং বিশ্বের প্রায় ১১৩টি দেশে রফতানি হয়। এতো কিছুর পরও দেশে প্রচলিত চিকিৎসাব্যবস্থার পাশাপাশি আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাপদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার উপরে এবং আন্তর্জাতিক বাজার ৬৫০ কোটি টাকারও বেশি। এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৯ শতাংশের উপরে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্তমানে সরকারি তালিকাভুক্ত ২৬৯টিরও বেশি ছোট-বড় ওষুধ কারখানা রয়েছে। যারা দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ পূরণ করে বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রফতানি করে আসছে। এর মধ্যে জেনেরিক ওষুধ উৎপাদনকারী অ্যালোপ্যাথিক ৯০০টি, ইউনানি ২৬৮টি, আয়ুর্বেদিক ২০১টি, হোমিওপ্যাথিক ও বায়োকেমি ৭৯টি এবং হারবালের নয়টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অর্থাৎ অ্যালোপ্যাথির সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য চিকিৎসাপদ্ধতিরও প্রসার বাড়ছে।
এই চিকিৎসাপদ্ধতির চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশের অনেক মানুষ এখনও দরিদ্র। বিভিন্ন রোগ, যেমন- কিডনির সমস্যা দূর করতে সর্বশেষ পদ্ধতি অপারেশনের মাধ্যমে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা। যা অনেক ব্যয়বহুল। কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে শুধুমাত্র ওষুধ দিয়ে তা দূর করা সম্ভব হয়েছে। এই চিকিৎসার খরচও খুব কম। সব মিলিয়ে দেশের এই দরিদ্র জনগোষ্ঠী মূলত অ্যালোপ্যাথি বাদ দিয়ে হোমিওপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। আর চিকিৎসকদের মতে, রোগী চিকিৎসা নিয়ে মানসিকভাবে সন্তুষ্ট থাকলে রোগমুক্তির পথ অত্যন্ত সহজ হয়। শুধুমাত্র কম খরচের দরুণ এই চিকিৎসা নিয়ে মানসিক প্রশান্তির মাধ্যমে রোগমুক্তি হচ্ছে।
এছাড়া মানুষের গোপনাঙ্গের সমস্যা বা যৌন সমস্যা দূরীকরণে হোমিওপ্যাথি ও হারবাল-ইউনানির সাফল্য অ্যালোপ্যাথির চেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে মানসিক প্রশান্তির কথা উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, যৌন সমস্যার বেশিরভাগই মানসিক সমস্যা। এক্ষেত্রে রোগীরা লজ্জাবোধ করে চিকিৎসকদের কাছে আসতে চান না। তারা হয় নিজে জেনে ওষুধ কিনে খান বা এসব হোমিওপ্যাথি ও হারবাল-ইউনানি কেন্দ্রে উপস্থিত হয়।
দিবসটি পালনে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং সারাদেশের হোমিও মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলো কেক কাটা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।