বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার জানান, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ফরিদপুর সদরসহ মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীসহ বিভিন্ন এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিপজন মিত্র, মো. মুজিবুল ইসলাম, মো. খায়রুজ্জামান ও মো. সাজিদ-উল-মাহমুদ বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় টহলে রয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে পঞ্চপল্লীর ঘটনায় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) থেকে রোববার (২১ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে বিজিবি মোতায়েন ছিল।
এরপর মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পঞ্চপল্লীতে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে মধুখালী ঈদগাহের সামনে মানববন্ধন শুরু হয়। সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন এলাকার পাঁচ শতাধিক মানুষ। আধা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে খণ্ড খণ্ড হয়ে মিছিল নিয়ে নোয়াপাড়ার মোড়, মাঝিবাড়ি, বাগাটের ঘোপঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন তারা। পরে তারা ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। এসময় সেখানে থাকা পুলিশের বাধা পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ছোড়া হয় ইটপাটকেল। একপর্যায়ে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফলে অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। এতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা মহাসড়কে যান চলাচল ব্যহত হয়। কয়েক শ যানবাহন আটকে পড়ে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক। এরপরও সড়ক না ছাড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি মন্দিরের প্রতীমায় আগুনের খবর পেয়ে জড়ো হন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় পঞ্চপল্লী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণে কাজ করা ৭ শ্রমিককে সন্দেহ করেন তারা।
পরে স্কুলে গিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করে নৃশংসভাবে মারধর করে উগ্র হিন্দুজনগোষ্ঠী । এতে গুরুতর আহত হলেও শ্রেণিকক্ষে আটকে রাখা হয়। প্রথমে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন চেষ্টা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন। পরে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের অতিরিক্ত সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আশরাফুল ও এরশাদুল নামে দুই ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় গত শুক্রবার রাতে মধুখালী থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় ৩ সদস্যের কমিটি।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম জানান, দুই শ্রমিককে হত্যার ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া ডুমাইন ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বারসহ জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।