বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
ক্লাসে বিশ্বনবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল ফিরে দেখা’র উনযুগপূর্তি উৎসব পালিত জমকালো আয়োজনে ৭৬ তম আর্ন্তজাতিক ক্রেডিট ইউনিয়ন দিবস পালিত বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে ফিলিস্তিনের মুজাহিদদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান -অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খোকসায় মুফতি ফয়জুল করীমের যাত্রা বিরতি পাংশায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য পাংশা পৌর সভায় মন্দির সমূহে নিরাপত্তায় কাজ করেছেন যুবদল নেতা আশরাফুল ইসলাম ফরিদ পাংশায় র‌্যালী মহড়া ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় আপনাদের পাশে ছিলাম আছি থাকবো -হারুন অর-রশিদ হারুন পাংশায় নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু প্রধান উপদেষ্টার সাথে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক খোকসার ফুলবাড়ি গ্রামে সিরাজ সর্দার কর্তৃক রাসুল (সঃ) কে কটূক্তি স্বামীর পরোকিয়া জেনে ফেলাই  কাল হলো রুমা’র !
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

পাড়ার সেই ক্রিকেট খেলা -মাহাতাব হাসান এমরে । অন্য রকম ছোট গল্প

মাহাতাব হাসান এমরে / ১৬৪ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২২, ১:২১ অপরাহ্ন

পাড়ার সেই ক্রিকেট খেলা

-মাহাতাব হাসান এমরে

পাড়াময় হৈ-হল্লা করা ছেলেপুলে বিকাল বেলায় ওমর সাহেবের বাড়ির পাশে পড়ে থাকা মাঠে ক্রিকেট খেলতে না পারলে যেন তাদের সুন্দর দিনখানা একেবারেই মাটি হয়ে যায়। মোল্লা বাড়ির নাতি ছেলেও ক্রিকেট খেলার জন্য কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আবছায়া পড়া মাঠে পা গুটিয়ে বসে থাকে। তার দাদুও পাশে বসে পানপাটা নিয়ে বেসম্ভব পান চিবাতে থাকে।

পাড়ার হুজুগে গুটিকয়েক খেলোয়াড় নিয়মিতই খেলার জন্যে হাজিরা দিত। তবে যাইহোক, তারা দাদুকে খেলতে না নিলেও আম্পায়ারের পদটি সর্বদা দাদুর জন্যে বরাদ্দ রাখা হত।

দাদু এতো বুঝাত তার নাতিকে কিন্তু একগুঁয়েমিপনা নাতি তার আবদার থেকে দূরে সরত না কখনো। ছোটবেলার খেলার নেশা বেসম্ভব নেশা, ভীষণ নেশা। একবার খেলার নেশা ধরলে, না খেলতে পারলে বসাও যায়, শোয়াও যায়, কোনো কিছু ভালোও লাগে না। এমন অস্থির করে মন ছটফট করতে থাকে।

তবে একগুঁয়েমিপনা নাতির সব আবদার মেনেই সকলে খেলা শুরু করত। তার অনেক আবদারের মধ্যে কিছু তুচ্ছ নিন্দনীয় আবদার হলো- আগে তার দল ব্যাট করবে। এতে প্রতিপক্ষ দল সর্বদা আপত্তি ছাড়াই খেলা শুরু করত।

কিন্তু অন্য আপত্তিকর আবদার তাদের জন্য বেশ বেমানান। তার মধ্যে একটা-দুটো হলো:-(ক):যে বেটা বল ফাটাবে সে নতুন বল কিনে দিবে। (খ):আমি সবার আগে ব্যাট করব।(গ):আমার কথা অমান্য করলে বল-ব্যাট নিয়ে সোজা বাড়ি চলে যাব।

ঐ পাড়ার ক্রিকেট খেলাতে আউট হওয়ার দারুণ একটি ভালো পদ্ধতি ছিল-সব দিকেই ছক্কা মারা জায়েজ কিন্তু বল যদি ছক্কা মেরে পাশের পুকুরে পড়লে তবে সে আউট এবং তাকেই জল থেকে বল তুলে আনতে হবে।

 

বেশ উত্তম আরেকটি সিদ্ধান্তও ছিল-মাগরিবের আযান দেওয়ার সাথে সাথেই খেলা শেষ হবে। এরকম ভালো-মন্দ নিয়ে ডজন খানেক নিয়ম মেনেই খেলা শেষ করতে হত প্রতিদিন।

 

পাড়ার ঐ খেলাতে বেশি দেখা যেত যে যত ছক্কা মেরেছে সে তত শেয়াল ভেজা ভেজেছে। এমন উদ্ভুত আউটে এ খেলা বেশ তাড়াতাড়ি চলত। বারেক দাদু আরেকটি বেশ ভালো কাজ করে রাখত। তিনি সর্বদা গা মোছার জন্য একটা গামছা এনে রাখত। প্রত্যেক খেলোয়াড়ই মাঝে মধ্যে ছক্কা মারতে বেশ ভয় করত। যাতে জঘন্য আউট আর বারে বারে প্যান্ট খুলে জলে ভেজতে না হয় যেন !

 

বারেক দাদুর ভীষণ মনোমুগ্ধকর আরেকটি অভ্যাস ছিল-সাঁঝের পর সব খেলোয়াড় নাতিদের বাড়ি যেত এবং নাতিরা পাঠে বসেছে কিনা তার খোঁজ নিত।

 

নাতির উদভ্রান্ত আবদার থাকলেও দাদার আবদারে নাতিদের মা-বাবারা কখনোও আপত্তি করত না বরং জোর করেই ছেলেদের মাঠে খেলা করতে পাঠাত। দাদুর শর্ত ছিল- “খেলা শেষ করেই পাঠে বসা চাই। আমি যদি তাকে পাঠে না বসতে দেখি পরের দিন সে খেলার অনুমতি পাবে না।”

 

বারেক দাদুর আরেকটি ভীষণ মনোমুগ্ধকর কাজ করত যা বেশ সকলকে আনন্দ দিত – তিনি দুই দিন পরপর বাড়ি থেকে বাদাম ভেজে আনত। খেলার শেষে নাতিদের হাতে এক এক মুট বাদাম দিত। শুধু এই দিনগুলোতে নাতিরা নয়, নাতনিরাও বাদাম খেতে শেষ বিকালে মাঠে এসে ভিড় জমাত।

 

একদিন করিম ছক্কা মারতে গিয়ে ব্যাটে-বলে মাটি খেয়ে ফটাস করে বল ফেটে গেলো। তারপরে বেশ তুলকালাম বেঁধে গেল বল কিনা নিয়ে। করিম বলল- দ্যাখ মতিন, তোর বল খুবলা মার্কা টাক পড়া। আমি তোকে নতুন বল কিনে দিতে পারব না। মুহূর্তের মধ্যে হুলুস্থুল বেঁধে গেল। পরে সকলে মতিনকে বলল- সাত দিন সময় দে, বল আমরা তোকে কিনে দিব।

 

এবার বল ফাটার এক সপ্তাহ আগেই দাদু চিকিৎসা নিতে শহরে গেলো। আজ দাদু থাকলে এমনটি হতো না। কারণ এর আগেও কয়েকটা ম্যাচে বল ফাটানো কাণ্ড ঘটেছে আর সব বল দাদুই আবার কিনে দিত।

সকলেই দোয়া করতে লাগল-দাদু ভালো হয়ে দ্রুত ফিরে আসুক কিন্তু পরে তারা জানতে পারল দাদু তিন মাস পরে বাড়ি আসবে।

পরে সকলে বসে বুদ্ধি পাকাতে থাকে। কীভাবে বল কিনবে আর বা টাকা কোথায় পাবে? সবার কথা শোনার পর এবার চিকুন মতিন বলল- একটি দারুণ বুদ্ধি আমার মাথায় এসেছে। ফলাফলও পাওয়া যাবে অনেক দ্রুতবেগে।

 

সে বলল-মায়ের কাছে থেকে পাঁচ টাকা সকলে নিবে আর বড় বোনের কাছ থেকে পাঁচ টাকা নিবে।

সাবাস ! এক সাথে আমাদের অনেক টাকা হবে। ওর বল কিনে দিয়েও আমরা নতুন বল কিনতে পারব।

সে সাথে সাথে সকলকে শেখায়ে দিল- মা’র কাছে গিয়ে সকলে বলবে- মা, আমি সন্ধ্যার পর অনেক সময় নিয়ে পড়ব কিন্তু আমাকে পাঁচ টাকা দিতে হবে। আর বড় বোনের কাছে গিয়ে বলবে- আপু তুমি আমাকে পাঁচটি টাকা দাও। আজ থেকে আমি তোমার সব কথা শুনব।

চিকুন মতিনের চিকুন বুদ্ধিটা প্রথমে অদ্ভুত লাগলেও ফলাফল দারুণ উপভোগ করার মত। এ যেন মাসিকে মা’য়ের মতো ভালোবাসা।

তাদের টাকাও হয়ে গেল আবার নতুন ব্যাট-বলও কিনে ফেলল সকলে মিলে। তখন থেকে একগুঁয়ে মতিনকে তারা আর খেলায় নেই না। তারা বলে দাদু আসা না পর্যন্ত তোকে মাঠের বাইরেই বসে আমাদের খেলা দেখে যেতে হবে। দাদুরও তাড়াতাড়ি আসা হলো না। তারা ওকেও খেলাতে নিতে পারল না।

 

তাদের দাদু ফিরে এলো তিন মাস নয়; পঁয়ত্রিশ দিন পর। একেবারে ফিরে এলো আবার একেবারেই চলে গেল। এখন মতিনকে তারা প্রতিদিন বাড়ি থেকে ডেকে এনে তার সাথে মিলেমিশে সকলে ক্রিকেট খেলত কিন্তু খেলা শেষে মতিন প্রায় কাঁদে। যে দাদুর হাত ধরে সে প্রতিদিন বাড়ি যেত। তার সেই আদুরে দাদু তার সাথে একটু কথা না বলে এভাবেই চলে গেল !

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর