জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনার মামলায় অভিযুক্ত তামিম আহমেদ স্বপনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪।
র্যাব-১৪, জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, তামিম আহমেদ স্বপনকে ময়মনসিংহ থেকে মধ্য রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত তামিম আহমেদ স্বপন (২৫) উপজেলার সাধুপুর কান্দাপাড়া এলাকার মোঃ খোকার ছেলে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার মেলান্দহ পৌরসভার শাহজাদপুর এলাকায় স্কুলছাত্রী তার নিজ বাড়িতে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবার ও স্থানীয়দের ধারণা, ধর্ষণের পর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করার কারণে সে আত্মহত্যা করেছে।
আত্মহত্যার আগে দুটি চিরকুটের একটিতে স্কুলছাত্রী লিখেছে, ‘মা, আমারে ওয়াহাব চেয়ারম্যানের ভাতিজা আজকের দিনে এক রুমে কাটাইছে। পারলে ক্ষমা করো। যদি কোনো বিচার করো ছেলেটার নাম তামিম আহমেদ শপন খান। মা-বাবা তোমরা ভালো থেকো। আমারে ভুলে যেও। আমি বেঁচে থাকলে তোমাদের সম্মান শেষ হয়ে যেত। বাবা-মা আবার বলতাছি, ভালো থেকো। বাবা-মা ভালো থেকো। গুড বাই, সোনা বাবা-মা।’
আরেকটি চিরকুটে সে লিখেছে, ‘মা-বাবা ওয়াহাব চেয়ারম্যানের ভাতিজা আজকে সারা দিন এক রুমে কাটাইছে। ও আমাকে খুব ডিস্টার্ব করত। ও আমারে বলছে, ওর সাথে দেখা করলে ও আমার জীবন থেকে চলে যাবে। কিন্তু ও আমার সাথে খুব খারাপ কিছু করছে, বলার মতো না। বাবা-মা তোমরা ভালো থেকো। আর ছেলেটির নাম, তামিম আহমেদ শপন খান। ইতি তোমার আদরের আশামনি।’
নিহত স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে খাওয়া শেষে স্কুলে চলে যায় তার মেয়ে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে স্কুল থেকে বাড়িতে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে তার কক্ষে শুয়ে পড়ে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঘুম থেকে না উঠলে তার মা ডাকতে গেলে কক্ষে গিয়ে দেখেন ঘরের বাঁশের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে মেয়ে ঝুলে আছে।
এসময় চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে কিশোরীকে নামিয়ে মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে নিহতের পরিবার ও এলাকার লোকজন অভিযুক্ত তামিম আহম্মেদকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় স্থানীয়রা।