ঘূর্ণিঝড় `ইয়াস’-এর প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে পদ্মাসহ দেশের নদ-নদীগুলো। এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে বুধবার ভোর থেকে নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বিআইডাব্লিউটিএ ও বিআইডাব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলো থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে নৌযান চলাচল।
সূত্র জানায়, গতরাত ২টা পর্যন্ত সব ফেরি চললেও ২টার পরে ডাম্প ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বুধবার ভোর রাতের দিকে কেটাইপ ও মিডিয়াম ফেরি এবং ভোর ৬টার দিকে রো রো ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।
বিআইডাব্লিউটিএ ও বিআইডাব্লিউটিসির বাংলাবাজার ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার বিকেল থেকে নদী কিছুটা উত্তাল হয়ে ওঠে। দূর্ঘটনা এড়াতে তখন লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বুধবার ভোর থেকে ঝড়ো বাতাস বইতে থাকলে পদ্মা প্রবলভাবে উত্তাল হয়ে ওঠে। দুর্ঘটনা এড়াতে বর্তমানে সব ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বিআইডাব্লিউটিসির মেরিন কর্মকর্তা (শিমুলিয়া) আহমদ আলী বলেন, পদ্মা উত্তাল থাকায় ভোর থেকে সব ফেরিসহ নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সঙ্গে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আর পূর্ণিমার প্রভাবে উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে চার ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ার প্লাবিত হতে পারে।
এরই মধ্যে ঝড়টির প্রভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঝোড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, বরগুনাসহ বিভিন্ন জেলার নিচু এলাকা এবং চরাঞ্চলগুলোতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। কোনো কোনো এলাকার বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে ঢুকতে শুরু করেছে পানি। অনেক স্থানে বেড়িবাঁধ উপচেও পানি ঢুকছে। বাঁধ না থাকা কিছু এলাকা এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে তিন-চার ফুট পানি বেড়েছে।
ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনেও ঢুকে পড়েছে। সুন্দরবনসহ বিভিন্ন নদী-খালে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ফুট পানি বেড়েছে। সুন্দরবনের দুবলার চরসহ জেলেপল্লীগুলোর বেশির ভাগ এলাকায়ই পানি ঢুকেছে। বনের কোনো কোনো অংশ দেড় থেকে দুই ফুট পানিতে ডুবেছে।