খোকসায় জরাজীর্ণ বিল্ডিং ওপর নতুন ছাদ, ভবন ধ্বসের আশংকা
মমিন হোসেন ডালিম, খোকসা,কুষ্টিয়া।
কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার সরকারী পোষ্ট অফিসসহ জেলার ৫টি পোস্ট অফিসে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের নিজস্ব র্অথায়নে চলছে সংস্কার কাজ।
সেই ধারাবাহিকতাই খোকসা উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক, খোকসা বাজারের মূল কেন্দ্রে আনুমানিক ৬০ বছর বা তারও বেশি সময় আগে নির্মিত জরাজীর্ন ভবন উপজেলা পোস্ট অফিস জানিপুর, খোকসা,কুুষ্টিয়া পোস্ট কোড নম্বর-৭০২০, অবস্থিত। আর সেই জরাজীর্ন ভবনের চলছে সংস্কার কাজ।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে প্রায় ষাট বছরের পুরাতন বিল্ডিংয়ের ওপড় নতুন করে ছাঁদ ঢালাই কতটা নিরাপদ? ষাট বছরের পুরাতন বিল্ডিংয়ের বেজ কলাম, ওয়ালের ওপড় নতুন করে ছাঁদ ঢালাই হবে ঝুঁকিপূর্ণ এমনটাই মনে করে খোকসা বাজারের ব্যবসায়ী মহলসহ এলাকাবাসী, তারা বলেন, আমরা শুনে ছিলাম এই পুরাতন বিল্ডিং ভেঙে নতুন ভবন তৈরি করা হবে কিন্ত এখন দেখছি শুধু ছাদ ভেঙে দিয়ে তার ওপড় আবার নতুন করে ছাদ ঢালাই হচ্ছে, এমনটা হলে সেটা হবে খুবই ঝুকিপূর্ণ আর এই কাজটা করা আসলেই অযৌক্তিক হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এই ভবন ধসে পড়ে প্রানহানীর আশংকা রয়েছে বলে মনে করেন তারা সেই সাথে সংস্কার নয় নতুন একটি ভবন তৈরির জোড় দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা পোস্ট অফিসের একজন কর্মচারী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, শুনেছিলাম বিল্ডিং সংস্কার করা হবে, কিন্ত সেটা যে এভাবে হবে ভাবি নাই, পুরাতন একটি বিল্ডিং ওপর যেভাবে নিম্ন মানের কাঁচামাল দিয়ে সংস্কার কাজ চলছে সেটা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। যেভাবে কাজ হচ্ছে সেটা আমাদের পছন্দ নয়, এভাবে কাজ হলে এই ভবন ধসে যাবে এটা নিশ্চিত বলা যেতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা পোস্ট মাস্টার নূর আহসান বলেন, আমি যতদূর জানি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এই ভবন উদ্বোধন করেছিলেন, ভবনের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক। ভবনের সংস্কার কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডিজি অফিস থেকে একটা চিঠি দিয়েছে, ভবনের মেরামত কাজ হবে এবং যে প্রতিষ্ঠান কাজ করবে সেই প্রতিষ্ঠানের লোক এবং ঢাকা থেকে আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন এসেছিলেন উনি আমাকে বলেছেন এরা এখানে কাজ করবে, কিন্ত কিভাবে করবে সেটা বলেও নাই এবং আমার কাছে সিডিউলও দেই নাই, ওনারা ওনাদের মতো কাজ করে যাচ্ছে আমি দেখছি । জরাজীর্ণ এই ভবনের ওপড় এভাবে কাজ করা ঝুকিপূর্ণ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে আমি তো ইঞ্জিনিয়ার না, তাই বিষয়টা নিয়ে মন্তব্য করাটাও ঠিক না, ইঞ্জিনিয়ারই ভালো বলতে পারবেন। এই ওয়ালের ওপড় ছাদ লোড নিতে পারবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে, তিনি বলেন, ঝুকিপূর্ণ কাজ ও ভবনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমি আমার দপ্তরে চিঠি দিয়েছি কিন্তু এখনো কোনো রেসপন্স পাইনি, এবং এই কাজের ঠিকাদারকেও আসতে দেখি নাই, মিস্ত্রিরা কাজ করছে, আর আমার তো দেখভাল করার দায়িত্বও দেওয়া হয়নি যে আমি আমার মতো করে বিষয়টা দেখবো। তবে খোঁজ নিয়ে যায় চট্রগ্রামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়েছেন তাদের ওই লাইসেন্সে কাজ করছেন কুষ্টিয়ার একজন ঠিকাদার।
এ বিষয়ে ওই ঠিকাদার, মুঠোফোনে জানান, কাজটি জরাজীর্ণ প্রকল্পের আওতায় রিপিয়ারিং এর কাজ করা হচ্ছে, নতুন ভবনের নয়, সিডিউল অনুযায়ি কাজ হচ্ছে, জনালা দরজা ভেঙে নতুন থাই গ্লাস লাগানো, গ্লাস্টার করা, প্লাস্টার ভেঙে প্লাস্টার করে তার ওপর টাইলস করা, ছাদের কোনো কাজ আমাদের নাই কিন্তু ছাদের অবস্থা খারাপ হওয়ায় ঢাকা থেকে স্যার’রা এসে সেটা দেখে ছাঁদ ভেঙে ফেলতে বলেন, এখন তারা আবার আসবে দেখবে রড চেক করে তারপর ঢালাই দেবে আর এই ছাদের টাকা তারা কোনা কোন জায়গা থেকে এ্যাডজাস্ট করে মেজারমেন্ট করে সমাধান করবে। এখনও বিল্ডিং এর অনেক কাজ বাঁকী আছে। এ রকম পাঁচটা পোস্ট অফিস মিলে একটা ওয়ার্ক অর্ডার আছে, মিরপুর, ভেড়ামারা,দৌলৎদিয়া, দৌলৎগঞ্জ, জীবননগর। তবে খোকসা উপজেলার সর্বস্তরের মানুষের দাবি সংস্কার নয়, নতুন ভবন হলেই তারা খুশি।