করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া একজন হিন্দু পরিবারের ছেলের লাশকে তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজন সৎকার করতে অস্বীকৃত জনালে এগিয়ে আসেন কুষ্টিয়ার আলেম-ওলামারা। পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কুষ্টিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার হরিনারায়নপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মৃত শ্যামপদ সাহার ছেলে অরুপ কুমার সাহা (৫২)। তিনি ছিলেন একজন বই ব্যবসায়ী। অরুপ হরিনারায়নপুর বাজার জামে মসজিদের সামনে তাঁর একটি বইয়ের দোকান রয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গত ১১ জুন আড়াইশো শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। হাসপাতালে চার দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে না ফেরার দেশে পাঁড়ি জমান অরুপ কুমার সাহা। মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ গ্রহণের জন্য পরিবারের সদস্যদের খবর দেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় ভয়ে পরিবারের লোকজন অরুপ কুমার সাহার লাশ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনেক বোঝালেও তাঁরা কোনভাবেই লাশ গ্রহণ করতে রাজি হননি। হরিনারায়নপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মন্ডল জানান, পরিবারের সদস্যদের অনেক বুঝিয়েও কোন লাভ হয়নি। তারা অরুপ কুমার সাহার লাশ গ্রহণে রাজি হননি। করোনায় আক্রান্ত ব্যবসায়ী অরুপ কুমার সাহার লাশ গ্রহণ না করায় বিপাকে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাপস কুমার সরকার জানান, পরিবারের সদস্যদের অনেক অনুরোধ করার পরেও তারা কোনোভাবেই লাশ গ্রহণে রাজি হননি। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডাক্তার এ এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ভয়ে পরিবারের লোকজন লাশ গ্রহণ না করায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে স্থানীয় ওলামাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। এগিয়ে আসেন কুষ্টিয়ার খলক ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের একঝাঁক ওলামা করোনায় মৃত অরুপ কুমার সাহার লাশের সৎকারের ব্যবস্থা করেন। সিভিল সার্জন ডাক্তার এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মানুষের জীবন মৃত্যু মহান আল্লাহতালার হাতে। করোনায় মারা যাওয়া অরুপ কুমার সাহার লাশ গ্রহণ না করার বিষয়টি তাদেরকে পীড়া দিয়েছে। স্থানীয় ওলামারা এগিয়ে এসে লাশের সৎকারের ব্যবস্থা করে মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছেন। সিভিল সার্জন জানান রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল আটটা পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনায় আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুজনের বাড়িই কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় বলে জানা গেছে।
করোনায় মরলে কি হয়?মৃত ব্যক্তি থেকে করোনা ছড়ায় না।এটা তো প্রমাণিত।খুব সহজে এবং স্বাভাবিক সৎকার করা যায়।আজ যা দেখলাম সেটা এক বছর আগে হলে ভালো হতো।ধ্যান ধারণা বদলাতে হবে।