দেশের বৃহত্ত জেলা কুষ্টিয়া। এই জেলায় ইদানিং করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে জেলা জুড়ে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। করোনাভাইরাস জনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০ জুন রাত ১২ টা এক মিনিট থেকে আগামী ২৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত এ লকডাউন বলবৎ থাকবে।
রবিবার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় লকডাউন চলাকালে সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা, দোকানপাট, শপিংমল, রেস্টুরেন্ট ও চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। তবে কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় (মুদি) পণ্যেও দোকান সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে।
সকল পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। জেলার অভ্যন্তরে আন্ত:জেলা ও দুরপাল্লার সকল ধরণের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এক্ষেত্রে ইজিবাইক/থ্রিহুইলারসহ সকল যান্ত্রিক যানবাহন বিধি নিষেধ আরোপকালীন সময়ে বন্ধ থাকবে। সকল ধরণের সাপ্তাহিক হাট/গরুর হাট বন্ধ থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে। জরুরি প্রয়োজনে চলাচলকারী সকলকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা যেমন- কৃষি উপকরণ, খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া) সরকারের রাজস্ব আদায়ের সাথে সম্পৃক্ত সকল দপ্তর/সংস্থাসমূহ জরুরি পরিষেবার আওতাভূক্ত হবে এবং তাদের কর্মচারী ও যানবাহন নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে। এর আগে বিকালে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরি সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন করোনার কুষ্টিয়া জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব সুলতানা আফরোজ। এছাড়াও পুলিশ সুপার মো: খাইরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, সিভিল সার্জন ডা: এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম, এনএসআই’র যুগ্ম পরিচালক ইদ্রিস আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: তাপস কুমার সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
করোনা পরিস্থিতির অবণতি ঘটায় এর আগে গত ১১ জুন থেকে দু’দফায় শুধুমাত্র কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় জেলা প্রশাসন থেকে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় কুষ্টিয়া জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ৮ জন এবং খোকসা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আরো এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার রাতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, জেলায় ২৫৬ টি নমুনা পরীক্ষায় আরো ৮৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে করোনা পরিস্থিতির অবণতির কারণে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রুপান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।