বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
ক্লাসে বিশ্বনবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল ফিরে দেখা’র উনযুগপূর্তি উৎসব পালিত জমকালো আয়োজনে ৭৬ তম আর্ন্তজাতিক ক্রেডিট ইউনিয়ন দিবস পালিত বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে ফিলিস্তিনের মুজাহিদদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান -অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খোকসায় মুফতি ফয়জুল করীমের যাত্রা বিরতি পাংশায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য পাংশা পৌর সভায় মন্দির সমূহে নিরাপত্তায় কাজ করেছেন যুবদল নেতা আশরাফুল ইসলাম ফরিদ পাংশায় র‌্যালী মহড়া ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় আপনাদের পাশে ছিলাম আছি থাকবো -হারুন অর-রশিদ হারুন পাংশায় নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু প্রধান উপদেষ্টার সাথে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক খোকসার ফুলবাড়ি গ্রামে সিরাজ সর্দার কর্তৃক রাসুল (সঃ) কে কটূক্তি স্বামীর পরোকিয়া জেনে ফেলাই  কাল হলো রুমা’র !
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

কিস্তির টাকা। একটি ছোটগল্প। মুহাম্মদ ইসমাঈল

মুহাম্মদ ইসমাঈল / ১৩৯ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২, ৬:২৪ পূর্বাহ্ন

কিস্তির টাকা
মুহাম্মদ ইসমাঈল

সকাল থেকেই কেমন মাথা ঘুরছে আইরিনের। আজ ঋণের কিস্তির তারিখ। পর পর তিনটা কিস্তি বাকি পড়েছে।
এনজি ও অফিসার জাহাঙ্গীর বলে গেছে, আজ যেমন করেই হোক কিস্তির টাকা পরিশোধ করতেই হবে। ওরা কাবলিওয়ালাদের মতোই নাছোড়বান্দা। কিছুতেই ছাড় দেবে না। টাকা না দিলে বাড়ি থেকে একদম যাবে না।
এদিকে আইরিনেরঅকর্মা স্বামী ক’দিন থেকে বাড়িতে বসে, বিছানায় শুয়ে শুয়ে শুধু আকিজ বিড়ি টানছে।
স্বামীর ওপর রাগ হ”েছ আইরিনের। অকর্মটার সংসারে এসে তার জীবনটাই মাটি হয়ে গেল। অকর্মা হলে কি হবে, আবার তেজও দেখায়। দুপুর হলেই ভাত দে ভাত দে বলে চেচায়। চাল-ডাল-নুন-তেল সব কিছুই ব্যব¯’া করতে হয়ে আইরিনের ঘরে চার-পাঁচটা ছেলে-মেয়ে তাদের মুখে খাবার তুলে দিতে হবে। থালায় ভাত বেড়ে দিলে আইরিনের মানুষটা রোগা-পটকা শরীরে কোঁত-কোঁত করে ভাত গেলে রাক্ষসের মতো। খাওয়ার পর বিড়ি শেষ হলে দেয় লম্বা ঘুম। সংসারে কোন প্রকার খেয়াল নেই। ছেলেমেয়েদের মানুষ করা, খাওয়া, পড়া, চিকিৎসা কোনদিকে তার খেয়াল নেই। যত মরা আইরিনের। ঘুম থেকে উঠে আবার বাজারে যায় মরদা চা গিলতে। চা-বিড়ির পয়সা ও দিতে হয় আইরিনের। বাড়িতে হাঁস-মুরগী পালে রিয়াজ হাজি। তার বাড়ি থেকে ধান এনে মুড়ি ভেজে কিছু আয় হয় আইরিনের। যে কটা টাকা ছিল গত এক সপ্তাহ থেকে সংসার চালা”েছ কোন রকমে। হাতে একটা টাকাও নেই আজ আইরিনের। আগামী কাল ছেলে-মেয়েদের মুখে দুটো খাবার তুলে দেবে তার কোনও ব্যব¯’াি নেই। অন্য দিকে কিস্তির টাকা।
এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কয়েক মাস আগে একটা বকনা বাছুর কিনেছিল। এখন ও পোয়াতি হলো না ওটা। গরুটা বা”ছা দিলে দুধ বিক্রি করে কিছু টাকা নিয়মিত আসতো। গরুটা শেষে বন্ধ্যাই নাকি ?
ছোট্ট গ্রাম পঞ্চাশ-ষাটটা ঘর। সব পরিবারের সঙ্গে আইরিনের চলাফেরা। সবাই ওকে ভালো মেয়ে হিসেবেই জানে।
বিকেলে সে বুশরার কাছে গেল পাঁচশত টাকা ধার নেওয়ার জন্য।
টাকার কথা বলতেই বুশরা তার নানান দু:খের কাহিনী শোনাল আইরিনকে।
মন খারাপ করে বাড়ি ফিরছিল আইরিন। রাস্তায় দেখা হলো বৃষ্টির সঙ্গে। তাকে বলল, পাঁচশ টাকা কয়েকদিনের জন্য ধার দিতে।
বৃষ্টি আইরিনকে বলল, তোর কিস্তির টাকা ব্যব¯’া হবে। রাত আটটার দিকে একটু ভালো কাপড়-চোপড় পরে আমার বাড়িতে আসিস।
রাত আটটা যেতেই বৃষ্টির সঙ্গে দেখা হলো আইরিনের। ওর জন্যই অপেক্ষা করছিল বৃষ্টি। তার বয়স আইরিনের চেয়ে বছর আটেক বেশি। আদর করে ওকে বুবু বলে ডাকে সে।
আজ ওকে কোথায় নিয়ে যাবে বৃষ্টি কে জানে !
পাড়াটা পার করে কিছু দুর যাওয়ার পর পুকুরপাড়ে এক বাঁশ বাগানের কাছে থামলো বৃষ্টি।
কিছুক্ষনের জন্য গেল বাঁশবাগানের শেষ মাথায়। তারপর ফিরে এসে আইরিনকে বললো, ঐ যে বাঁশঝাড়ের পাশে একটা বস্তি আছে না ঐখানে যা। ঘরটা খালি তোর জন্য একটা লোক অপেক্ষা করতাছে। ভালভাবে কথা বলবি। চেঁচামেচি করবি না, যা করতে বলবে, তাই করবি। জোরে কথা বলবি না।
একবার এক সেকেন্ডের জন্য টর্চের আলো পড়ল বস্তির ভেতর। আইরিনকে ঠেলে দিল বৃষ্টি। বস্তিতে আইরিন যেতেই দেখল জোরে জোরে সিগারেট ফুঁকছে মাঝ বয়সী এক লোক।
সিগারেট শেষ করে গুন্ডামার্কা লোকটা এগিয়ে আসল আইরিনের দিকে। একে তো গ্রামের মেয়ে আরো সহজ সরল দুনিয়ার কোন প্যাচ সে বোঝে না। চেহারাটা ছিল খুব সুন্দরী।
সুন্দরীদের যত কাল তো এখানেই। অনেক ক্ষেত্রে ই”ছা থাকলেও ভালো থাকা যায় না।
আইরিন এবার বুঝার বাকি রইল না। সব বুঝে ফেলল। ঋণের সুদের টাকার জন্য আজ আমাকে অন্ধকারে নিয়ে যা”েছ বৃষ্টি। আইরিনের কাছে এসে লোকটা বলল তোমার নাম কি ? কোন উত্তর দিল না। চোখের পানি গড়াতে গড়াতে বলল, ভাই! তুমি আমার ভাই। আজ পর্যন্ত আমার এই যৌবন এ শরীর কোন লোক ধরতে পারেনি আমার স্বামী ছাড়া। তুমি আমার একমাত্র ভাই। কিস্তির টাকার জন্য আজ আমার এখানে আসা। আমি যদি বুঝতে পারতাম বৃষ্টি আমারে এহানে নিয়ে আসবে কোনদিন আসতাম না।
কিস্তির টাকার জন্য এনজিও কর্মীরা যদি আমার ঘর, আমার গরু সব নিয়ে যায় তাও আসতাম না। গরীবের দাম তার চরিত্রটি। এবার লোকটি বলল, বোন তোমার কিস্তির টাকা কতো ? পাঁচশো। তুমি আমাকে বোন বললা। বৃষ্টি কিছুই জানেনা।
লোকটি এক হাজার টাকা দিয়ে বলল বোন তুই পাঁচশো টাকার কিস্তি দিবি, বাকী পাঁচশো টাকা দিয়ে ডাল-চাল কিনবি। আজ থেক্যা আমি ও এ কাজে কোনদিন যাব না।
তুই আমার চোখ খুলে দিলি। বাড়ির সামনে জড় হয়েছে এনজিওর তিনজন লোক। কিস্তির টাকা নেওয়ার জন্য জটলা করেছে।
রাত দশটা। কিস্তি পরিশোধের বই হাতে একজন আইরিনকে দেখে বলল, এই যে এসে গেছে আইরিন। আজ কিš‘ু কোন অজুহাত শুনব না, কিস্তির টাকা না নিয়ে, বাড়ি ছাড়ব না।
এনজিওর যে লোক ফটর ফটর করছিল আইরিন তার সামনে গিয়ে দাড়াল, আঁচলের খুঁট থেকে পাঁচশো টাকার নোট বের করে বেশ ঝাঁঝের সঙ্গে বলল, এই নেন কিস্তির টাকা। মরার টাকা, সুদের টাকা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর