মাহমুদ শরীফ, কুমারখালী (কুষ্টিয়া) সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার পল্লীতে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন ইসলামী স্থাপত্য স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের কৃষি প্রধান স্বস্তিপুর গ্রামে এই প্রাচীন স্থাপত্যটি কালের সাক্ষীই বটে। নবাব শায়েস্তা খানের আমলে তৈরি মসজিদটি আজও বিদ্যমান।
জানা যায়, নবাব শায়েস্তা খানের নামানুসারে গ্রামটির নাম ছিল শায়েস্তাপুর। কালক্রমে অপভ্রংশে এসে শায়েস্তাপুর থেকে স্বস্তিপুর নামকরণ হয়। এখন স্বস্তিপুর হিসাবে গ্রামটি পরিচিত।
শায়েস্তা খানের আমলে এই স্বস্তিপুর গ্রামের পাশ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণগঞ্জ থেকে একটি রাস্তা চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা থানা হয়ে এসে কুষ্টিয়ার উপর দিয়ে ফরিদপুর জেলার মাঝখান দিয়ে ঢাকা পর্যন্ত চলে যায়। এখনও একটি মরা নদীর স্মৃতি চি থেকে অনুমান হয় যে, এক সময় এই নদীটি কলকল বেগে ছুটে চলত স্বস্তিপুর গ্রামের ভেতর দিয়ে।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, শাহী ফৌজদের বিশ্রামকালে পথিমধ্যে নামায আদায়ের জন্য এই মসজিদটি তারা তৈরি করেছিল। উম্মি হুরায়েরা বিলু’র কবিতা: তারাবি
স্বস্তিপুর মসজিদটির ৪ কোণে চারটি থামের উপর ৪টি ছোট গম্বুজ শোভা পাচ্ছে। আর মাঝের গম্বুজটি অন্যগুলোর থেকে অনেকটা বড়। এই মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব ০.৯১ মিটার এবং পিলারসহ তা ১.০১ মিটার। এটি এমন একটি ছোট মসজিদ যে তাতে মাত্র এক সারি মানুষ নামাজ পড়তে পারে। এখন অবশ্য মসজিদের পূর্ব দেয়াল সংলগ্ন একটি বারান্দা যুক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয়েছে। মসজিদটি যে মুঘল যুগের তাতে গবেষকরা একমত প্রকাশ করেছেন। এই মসজিদটি সংস্কারের পর সংস্কার হতে হতে এর প্রাচীনতত্তে¡র স্মৃতি চিহৃ অনেকটা বিলুপ্তির পথে।
ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবির ঘটনায় নিখোঁজ আট জনের মধ্যে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার
বর্তমানে খতিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা সিরাজুল ইসলাম নিজামী। তিনি জানান, প্রতিনিয়ত মসজিদটি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত দর্শনার্থী এখনও ভীড় করেন। খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে ঝিনাইদহগামী সড়ক ধরে ১১ কিলোমিটার এগিয়ে গেলে স্বস্তিপুর গ্রামে মসজিদটি পাওয়া যাবে। শুক্রবার বিভিন্ন ¯’ান থেকে দর্শকদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। অনেকেই পিকনিক বা শিন্নি করতে ছুটে আসে এখানে। মানত, শিন্নির জন্য আলাদা জায়গাও রয়েছে।
আজ বিভীষিকাময় সেই ২৫ মার্চ
কুষ্টিয়ার ইতিহাস থেকে জানা যায়, স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ ১৮৬০ এর দশকে নির্মিত হয়েছে। ইট, পাথর, বালু আর তৎকালীন উপাদানসমূহ দিয়ে শাহী এই মসজিদটি নির্মিত হয়। স্বস্তিপুর শাহী মসজিদ বাংলাদেশের অতি প্রাচীন একটি মসজিদ ও প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন। মসজিদটির জন্য স্বস্তিপুর অজপাড়া গ্রামটি আজ পরিচিতি পেয়েছে দেশ-বিদেশে। মাঝে মধ্যেই শেকড় গবেষক, লেখক, পর্যটক এই মসজিদটি পরিদর্শনে আসেন। আপনিও ঘুরে যেতে পারেন সময় করে।