রহমান মাজিদ Rahman Mazidur কবি, গীতিকার, শিল্পী ও সংগঠক। তার প্রকৃত নাম মো. মাজিদুর রহমান
Md. Mazidur Rahman। ১৯৮৫ সালের ৫ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া জেলার খোকসা থানার সাতপাখিয়া গ্রামে জন্ম। বাবা আব্দুল মোমিন ব্যাবসা করেন ও মা সালমা বেগম গৃহিণী। পাঁচ ভাই এক বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। শিক্ষাগত জীবনে তিনি এসএসসি ২০০০ সাল ১ম বিভাগ, এইচএসসি ২০০২ সাল ২য় বিভাগ, অনার্স ২০০৭ সাল ২য় শ্রেনি, মাস্টার্স ২০০৮ সাল ২য় শ্রেনি (ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। তার রক্তের গ্রুপ বি-পজিটিভ।
রহমান মাজিদ এর স্ত্রী রেশমা খাতুন গৃহিণী, দুই মেয়ে মারিয়া আফরিন মীম ও মাইশা তারান্নুম সাফা, এক ছেলে সাফওয়ান মোহাম্মদ শাদীদকে নিয়ে ৭৬২/এ মনিপুর, মিরপুর ২, ঢাকায় বসবাস করছেন। পেশাগত জীবনে তিনি ব্যাংকার।
রহমান মাজিদ কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লিখেন। তার প্রকাশিত কবিতার বই ১. কাপুরুষ সিংহ (কবিতা) ২০১৭, পাথফাইন্ডার পাবলিকেশন্স বগুড়া, ২. সভ্যতা নারী ও ইসলাম (প্রবন্ধ) ২০১৮, পাথফাইন্ডার পাবলিকেশন্স, বগুড়া, ৩. বাঁক ফেরার অপেক্ষায় (কবিতা) ২০১৯, ইনভেলাপ পাবলিকেশন্স, ঢাকা। তিনি ১. ইয়থ ডেভেলপমেন্ট ফোরাম সাহিত্য পুরস্কার ২০১৮, ২. বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিবার (বাসাসপ) পুরস্কার ২০১৯, ৩. সৃজন সাহিত্য পুরস্কার ২০২০ পান। তিনি ১. উপদেষ্টা, সৃজন সাহিত্য সংগঠন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২. উপদেষ্টা, তাল পাতা সাহিত্য পরিষদ, সাভার, ঢাকা, ৩. সাধারণ সম্পাদক, সংকল্প সাংস্কৃতিক সংসদ, ঢাকা।
লেখকের সাথে যোগাযোগ মোবাইল: ০১৭২৪১৩৬৪৫৯, ইমেইল: mmrahman1985kushtia@gmail.com, ফেসবুক: রহমান মাজিদ
আমরা বাংলাদেশ ভূমির পাঠকদের জন্য তার স্বরচিত কয়েকটি কবিতা এখানে উপস্থাপন করছি। আশা করছি, বাংলা ভাষাভাষিদের কাছে কবিতাগুলি অনেক অনেক সুখপাঠ্য বলেই বিবেচিত হবে।
এই শহরে কেউ হাটে না!
মানুষের পাগুলো পিঠে নিয়ে
দৌড়াচ্ছে কেবল রাস্তাগুলো।
এই শহরের মনটা খুবই স্থানু
আইল্যান্ডের নাভিমূলে পুঁতে দেয়া বৃক্ষ যেনো
দেহের মরা কাঁধে নিয়ে
ছুটছে কেবল ঘরগুলো।
এই শহরে অসামর্থ খুবই ঘাসের কোমড়
গ্যালিভার লিলিপুটের মতো বয়স বাড়লেও
বাড়েনা তাদের দেহের আয়তন।
শঙ্কারা শুধু স্বাধীন এখানে
দিনের আলো নেমে গেলে সুইমিংপুলে
ঘরে ঘরে কড়া নাড়ে আতঙ্কদা।
তোমার নিঃশ্বাসের নদীতে আমি ব্রজেন দাস
রহমান মাজিদ
তোমার জন্য নির্মাণ করেছি একটি পৃথিবী
যেখানে নাই কোন আকাশ
কারণ আমি এটা জানি যে
আকাশেরও আছে সমাপ্তি
উঁচুনিচু, খানাখন্দ, গৃহসজ্জা
আর দন্ডায়মান একটি প্রাতিষ্ঠানিক সদরদপ্তর
তাতে চেয়ার পেতে বসে আছেন একজন আল্লাহ।
তোমার নিঃশ্বাসের নদীতে আমি ব্রজেন দাস
ঢেউ যেমন ঢেউকে জড়িয়ে ধরে, চুমো খায়
অতঃপর ছেঁকে তোলে ফুসফুসীয় পঙ্কিলতা
নদী তোমার আত্মা অথবা তুমি তার স্বচ্ছ জলধারা।
বয়সের দেয়ালে ঝুলিয়ে দেব সুনিপুন সময় যন্ত্র
থাকবেনা আরম্ভ নির্দেশিকা
সমাপ্তির অবিরাম তাড়াহুড়া
জয়নুলের রঙ তুলিতে আঁকা
দুর্ভিক্ষের নিশ্চল ছবির মতো
সময়ের কাঁটা স্থির দাঁড়িয়ে রবে মধ্যবর্তী দ্বি-প্রহরে
তুমি আমি ছবি হবো, অনন্ত সে পৃথিবীর করিডোরে।
তিন.
শয়তানের পেস্রাবে কর্দমাক্ত উঠোন
রহমান মাজিদ
এই যে একটা বাড়ি বানানো হলো
নির্মাণ করা হলো চালের উপরে চাল
ভোরের আলোয় ঢেলে জাফরানি রঙ
ধুয়ে দেয়া হলো এর বিস্তৃত আঙিনা
অতঃপর গোলাপের সৌরভ ছিটিয়ে
সুবাসিত করা হলো বাতাসের কলার।
কিন্তু হায় আফসোস ! মনে হচ্ছে
বিলোপিত সুন্দরে ক্ষিয়মান বাড়িটার নাভিমূল
বেশ্যার স্তনের মতো দৃশ্যমান
মাকালের কুৎসিত কদর্যতা
তবে কি মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল গোলাপের শিশি?
না কি নকল ছিল জাফরানের পীতাভ সৌন্দর্য?।
শয়তানের পেস্রাবে কর্দমাক্ত উঠোন
দেবে যাবে তোমার ঘোড়ার খুর
চকচকে পুরোনো জামা গায়ে তবুও দ্যাখো
কালের বাতাসে শিস মারে সুলেমানি ক্রেন।
নিমজ্জিত চন্দ্রপ্রভার আদিম হামাগুড়ি
রহমান মাজিদ
আমার কাছে যা বিশ্রী ছেনালিপনা
তোমার কাছে শান্তির পূণ্য রথযাত্রা
তোমার জন্য বিদ্রোহের নাইট্রিক এসিড
ক্ষত উপশমের প্রতিষেধক কুষ্ঠ রোগীর
অথচ আমি জানি ঐ সকল সাধারণ
যারা সন্ধ্যা তারার মতো হঠাৎ জ্বলে
নিরুদ্দেশ কোন দুর্গম পাহাড়ের ভাঁজে
ভালবেসেছিল মাটি, মানুষ, সবুজ গুল্মলতা।
ছেলেমেয়েরা, যারা বুনেছো রক্তবীজ
শুনতে কি পাও ঝর্নার কলকল ধ্বনি?
দেখতে কি পাও বিচ্ছুরিত সূর্যস্বর্ণরেখা?
শপথ উদয়াস্তে পুঞ্জীভূত সচল মেঘমল্লার
যে চন্দ্রপ্রভা তলিয়ে গেছে অতল সায়রে
সাগরপাড়ে ঐ দেখ তার আদিম হামাগুড়ি
মর্মর হাড়ে আজ বুঝি তাই গ্রোথিত হবে
অপ্রতিরোধ্য এক দ্রোহের গোলাপ।
পাঁচ.
তাঁতের মধুর খটখটি
রহমান মাজিদ
ঘরে কিবা জনপদে, মানুষ তোমার
কাপড়াভাবে খসে পড়ে লজ্জা যদি
গোয়াল গাঁয়ের হাটে এসো দলে দলে
আপনি এলে জ্বলবে আলো কারো ঘরে
উড়বে কারো টিনের থালে উঞ্চ ধোঁয়া
হাটুরে ফিরবে কখন ময়দা হাতে?
পেটে জ্বলা খিদের চিতা মা যে অনেক
প্রতিক্ষাতে কোলে নিয়ে বুকের মানিক।
ভাল্লাগেনা বিষে ভরা নগর হাওয়া
হরহামেশা বিটোফেনের চিঠি পড়া
আসছে শীতে আমিও যাবো সবান্ধবে
দাঁড়িয়ে যাবো শাহিনুরের তাঁতের ঘরে
মুগ্ধ হয়ে শুনবো তাঁতের খটখটি আর
দেখবো বসে মেরা মাকুর গাদন খেলা।
এ সকল প্রতিভাশীল, সৃজনশীল কবিদের ভাল লেখনীর দ্বারা এ ধরনীর বুকে অঙ্কুরোদগম হক হাজারো কবি