বাম হাতে কিয়ামতের মানচিত্র নিয়ে আমার জন্ম,
টেনশনের চোটে আজানের শব্দকে আরদালির হুংকারের মতো লাগে-
ফলবতী গন্দম গাছের ছায়ার নিচে ঝিরিঝিরি বাতাসে
ইসরাফিলের সিংগায় মুখ লাগিয়ে বসে থাকি ফুৎকারের অপেক্ষায়,
হাতের তালুতে আগুনের ফুলকি,
যৈবতী হাওয়ার মুচকি হাসি
ইথারের তারে তারে মিশে যায় মন চুরি করার খবর।
আরশের খুঁটির নিচে আবেশে তন্দ্রা করে ভর
নির্মিলিত চোখ খুঁজে ফেরে মনুটার সুকোমল বুক,
মাথার ঘিলুর ভিতর বসানো গোপন এ্যাপসগুলো কিলবিল করে ওঠে
ইলিক্ট্রিক ডিভাইসগুলো নিরলস ক্ষয় করে যায় শক্তি
মেমোরির চোখে কোনো ঘুমের আলামত নেই-
উদভ্রান্ত মেঘের আবছায়ায় সাদা বকের ডানায় ভর দিয়ে
তুমি যখন এলে গন্দমের ফেনায়িত পেয়ালা হাতে
মাতাল হাসির ঝিলিকে সুধালে তুমি-
‘আমি কি তোমায় পেয়েছি পুরোটা?’
পয়গম্বরের মতো গুরুগম্ভীর স্বরে বললাম, হ্যাঁ হ্যাঁ পুরোপুরি পেয়েছি বৈকি।
মাধ্যাকর্ষণের মাদকতা কেটে যাবার পর যখন কবিতার খাতা নিয়ে বসি-
তখন পাহাড়ি ভেড়ার পালের মতো বেরিয়ে আসে সত্যের পঙ্গপাল
তারই কয়েকটি সত্যের কাছাকাছি কথা বলে রাখি এখানে-
আমার সেদিনের যে হাসি দেখে তুমি বিমোহিত হলে
ওটা মিথ্যে ছিলো কসম,
আজীবন কাছে থাকবো বলে তোমার নাকফুল ছুঁয়ে যে শপথ বাক্য পড়েছিলাম
সেটাও কিন্তু মনের কথা ছিলো না,
‘হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিক আছে, বুঝেছি’- বলে গুরুজির মতো মাথা ঝাঁকালেও
আসলে কিন্তু কিছুই বুঝিনি আমি।
স্বপ্নের ঘোরে তোমার সাথে বউচি খেলার যে গল্প বলেছিলাম ওটাও ছিলো বানানো,
গড়াইয়ের মোহনায় ঝালমুড়ি খাওয়ার সময়
আমার চোখের রেটিনায় টলমল পানি দেখে তুমি কেঁদে দিলে,
সত্যি বলছি- ওটা ছিলো পিঁয়াজের ঝাঁজের কারণ,
চরের ধূলিকণা যোগ দিয়েছিলো তার সাথে-
সিথানে যার শিমুল তুলার বালিশ আছে
তার কি অশ্রু মুছবার আঁচলের অভাব?
সংখ্যার জনকের কাছে জানাই কৃতজ্ঞতা
তা না হলে আকাশের তারা গণনা সহজ কর্ম ছিলো না,
ফার্মেসির সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই স্লিপিং পিলের পাতা হাতে দেয় ধরিয়ে-
শুধু একজনই বুঝে নাই আমার শরীরের ভাষা,
চাঁদের বুড়ির কাছে সাক্ষ্য তালাশ করে কী লাভ?
আমি তো রাতজাগা পাখিদের সাথে জেগে জেগে
জোনাকির মিটিমিটি আলোতে
ভালোবাসার মিথ্যে মিথ্যে গল্প বানাই,
কসম করে বলি-
সেই ভালোবাসার নায়ক আমি নই,
সব গল্পেই একজন খলনায়ক তো লাগে-
আমি না হয় তাই হলাম।