বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
ক্লাসে বিশ্বনবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল ফিরে দেখা’র উনযুগপূর্তি উৎসব পালিত জমকালো আয়োজনে ৭৬ তম আর্ন্তজাতিক ক্রেডিট ইউনিয়ন দিবস পালিত বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোকে ফিলিস্তিনের মুজাহিদদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান -অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খোকসায় মুফতি ফয়জুল করীমের যাত্রা বিরতি পাংশায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য এইচ.এস.সিতে আসিফের অনন্য সাফল্য পাংশা পৌর সভায় মন্দির সমূহে নিরাপত্তায় কাজ করেছেন যুবদল নেতা আশরাফুল ইসলাম ফরিদ পাংশায় র‌্যালী মহড়া ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত অতন্ত্র প্রহরীর ন্যায় আপনাদের পাশে ছিলাম আছি থাকবো -হারুন অর-রশিদ হারুন পাংশায় নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু প্রধান উপদেষ্টার সাথে জামায়াতে ইসলামীর বৈঠক খোকসার ফুলবাড়ি গ্রামে সিরাজ সর্দার কর্তৃক রাসুল (সঃ) কে কটূক্তি স্বামীর পরোকিয়া জেনে ফেলাই  কাল হলো রুমা’র !
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

কবি আল মাহমুদ: জীবনমুখী পাঠকের অনিবার্য প্রয়োজন

প্রতিবেদকের নাম / ৪৪০ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১, ১২:২০ অপরাহ্ন

কবি আল মাহমুদ: জীবনমুখী পাঠকের অনিবার্য প্রয়োজন

–ওয়াজেদ বাঙালি
আধুনিক বাংলা কবিতার ইমাম। বাংলা মায়ের ‘সোনার নোলক’ আল মাহমুদ (১৯৩৬-২০১৯)। বাংলা সাহিত্য গগনের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র কবি আল মাহমুদ জুলাই ১১,১৯৩৬ বর্তমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের উপকণ্ঠে মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঐতিহ্য ও বিশ্বাসের কবি। তার কাব্যভূমি একত্ববাদের বিশ্বাসে নিবিড়ভাবেসিক্ত। বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তম মানুষদের বিশ্বাসের ধারক তার কবিতার সম্মানিত চরণগুলো। তিনি প্রকৃতির মধ্যে তার দৃঢ় বিশ্বাসের শব্দচয়নে ছিলেন ভিশন পারদর্শী। তিনি লিখেছেন—
একবার পাখিদের ভাষাটা যদি
শেখাতেন সোলেমান পয়গম্বর।
জানতাম পাতাদের আড়ালে তারা
ঘর দিয়ে কেন ঘরে ঘর সুন্দর;
(তারিকের অভিলাষ: পাখির কাছে ফুলের কাছে)
অথবা
তিনি ১৯৮৭ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে শহীদ আব্দুর রহিম স্মরণে অসাধারণ কবিতা লেখেন—
কে বলে নিহত এরা ?পরাজিত মৃত্যুর পিছনে
আমি শুনি অবিশ্রাম ডানার আওয়াজ
উড়ে যায় জোড়া বাঁধা গুঞ্জন মুখর হরিয়াল।
উড়ে যায়
বেহেশতের সবুজছায়ায়।
(রক্তের বৃষ্টির পর)
তার কাব্য জীবনের প্রথম ভাগে কিছুটা নাস্তিক্যবাদের ছায়া লক্ষণীয়।, আমি বলব এটা তার পথের দ্বিধা , দশ রাস্তার মোড়ে সামান্য সিদ্ধান্তহীন ইতস্ততা। অচিরেই তিনি পৌঁছে গেছেন ঐতিহ্যের মহাসড়কে, সিরাতুল মুস্তাকিমে। কবি নিজেই বলেছেন–
” আমি নিঃসর্গরাজি অর্থাৎ প্রকৃতির মধ্যে এমন একটা সংগুপ্ত প্রেমের মঙ্গলময় ষড়যন্ত্র দেখতে পাই যা আমাকে জগৎ- রহস্যের কার্যকারণের কথা ভাবায়।,,,এভাবেই আমি ধর্মে এবং ধর্মের সর্বশেষ এবং পূর্ণাঙ্গ বীজ মন্ত্র পবিত্র কোরআনে এসে উপনীত হয়েছি ।”(আল মাহমুদ /কবিতার জন্য বহুদূর,পৃষ্ঠা ৩২-৩৩)। তিনি আরো বলেছেন,’ নাস্তিকতার উপর মানবতা দাঁড়াতে পারে না, পারবে না।’
তাই বুঝি বিশিষ্ট ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটনের আফসোস —
” আল মাহমুদ রুটি মদ ছেড়ে দিয়ে জায়নামাজে উপড় হয়ে পড়েছেন।”(কিছু ধ্বনি)।
কবি আল মাহমুদ ছিলেন লোকজ শব্দ প্রয়োগে ভীষণ ওস্তাদ। বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক হাসান হাফিজ তাকে ‘মৃত্তিকা মননের সৌরভ সিক্ত কবি ‘ বলে আখ্যায়িত করেছেন।(৫ জুলাই,২০১৯, দৈনিক নয়া দিগন্ত)। এ সম্পর্কে কবির মন্তব্য,” আমি আমার কবিতার জন্য একটি পছন্দমত ভাষাভঙ্গি উদ্ভাবন করতে গিয়ে আঞ্চলিক শব্দ রাজের সন্ধান পাই।”(কবিতার জন্য বহুদূর /আল মাহমুদ)।
একসময় নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলাদেশে কাদের কবিতা আপনার ভালো লাগে ?এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন ,
“আল মাহমুদ ।অসম্ভব ভালো কবি তিনি। যদিও তার সঙ্গে আমার মত মেলে না।”
বাংলা সাহিত্যকে তিনি অসম্ভব শৈল্পিক সম্পদে সমৃদ্ধ করেছেন।
কবিতা: লোক-লোকান্তর, কালের কলস, সোনালী কাবিন, মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো, অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না, বখতিয়ারের ঘোড়া, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, মিথ্যাবাদি রাখাল, আমি দূরাগামী, হৃদয়পুর, দ্বিতীয় ভাঙ্গন, নদীর ভিতর নদী, উড়াল কাব্য, না কোন শূন্যতা মানিনা , বিরামপুরের যাত্রী, তোমার জন্য দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী, বারুদগন্ধী মানুষের দেশে, তুমি তৃষ্ণা তুমি পিপাসার জল, সেলাই করা মুখ, পিপাসারর বালুচরে, প্রেম পত্রপল্লবে, মায়ার লড়াই ,আমি সীমাহীন যেন বা প্রাচীন বটবৃক্ষের মতো, দেশের কবিতা, একি অশ্রু একই রক্ত, তোমার গন্ধে ফুল ফুটেছে, তোমাকে হারিয়ে কুড়িয়ে পেয়েছি ইত্যাদি।
উপন্যাস: যেভাবে বেড়ে উঠি, ডাহুক, কাবিলের বোন, উপমহাদেশ, কবি ও কোলাহল, পুরুষ সুন্দর, নিশিন্দা নারী, আগুনের মেয়ে, যে পারো ভুলিয়ে দাও, পুত্র , ধীরে খাও অজগরী, যে যুদ্ধে কেউ যেতেনি , নিশি বিড়ালীর আত্মস্বর, তুহিন তামান্না উপাখ্যান , আলোক পুলক শিহরণ, চরণধ্বনি, ক্রীতদাসী, বিবি মরিয়মের উইল, সপ্তর্ষি , মোহিনীর জীবন ঝংকার, আগন্তুক, ময়নামতির নেকলেস , যুগলবন্দী, ত্রিশিরা, পোড়ামাটির জোড়া হাঁস,বিবেকের বাতায়ন ,উষ্ণ কদমের চর,রিপু ইত্যাদি।
কিশোর উপন্যাস: মরু মুষিকের উপত্যকা, ময়নামতির ছেলে।
প্রবন্ধ: দিনযাপন, কবির আত্মবিশ্বাস, নারী-নিগ্রহ, কবিতার জন্য বহুদূর, কবিতার জন্য সাত সমুদ্র ,কবির সৃজন বেদনা, সময়ের সাক্ষী, মহানবী হযরত মুহাম্মদ সা:, দশ দিগন্ত উড়াল, বারো মাস তেরো পার্বণ, সমকালীন কাব্য আন্দোলনের ধারা ইত্যাদি।
শিশু-কিশোর সাহিত্য: পাখির কাছে ফুলের কাছে, একটি পাখি লেজ ঝোলা, মোল্লাবাড়ির ছড়া, ফড়িং ধরার গল্প ।
তিনি বাংলা সাহিত্যের অহংকার। আমাদের রক্তে কেনা বাংলা ভাষার ‘সোনার নোলক’ কবি আল মাহমুদ তার বৈচিত্র্যপূর্ণ রচনায় বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা: একুশে পদক ,বাংলা একাডেমী পুরস্কার, জয় বাংলা সাহিত্য পুরস্কার, কলকাতা সাহিত্য সম্মাননা, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কার, সূফী মোতাহার হোসেন সাহিত্য স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ লেখক সংঘ পুরস্কার ,অগ্রণী ব্যাংক শিশু একাডেমী পুরস্কার, আবুল মনসুর আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার, কাফেলা সাহিত্য পুরস্কার ,(কলকাতা) গতি সাহিত্য পুরস্কার,( কলকাতা )হুমায়ুন কাদের স্মৃতি পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, নাসির উদ্দীন স্বর্ণপদক, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার , কিশোরকণ্ঠ সাহিত্য পুরস্কার, লালন পুরস্কার ইত্যাদি সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
কবি আল মাহমুদ যেহেতু দেশ ও জাতিকে ভালোবেসে সাহিত্য চর্চা করেছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসকে বেগবান করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, প্রাণের আঞ্চলিক ভাষাকে সাহিত্যে সম্মানিত করেছেন, সেহেতু তিনি আমাদের নিজস্ব কবি তিনি আমাদের স্বজন প্রিয়জন আত্মার আত্মীয়। তাই তাকে জানা প্রয়োজন তাকে গভীর অধ্যায়ন করে বাংলা সাহিত্যকে আরও সমৃদ্ধ করার অবকাশ রয়েছে। আশা করি, বিদগ্ধ বাঙালি পাঠক আল মাহমুদ অধ্যয়নে পরিতৃপ্ত হবেন। তাকে পড়তে হবে তার প্রয়োজনে নয় বাঙালির প্রয়োজনে বাংলাদেশের প্রয়োজনে বাংলাদেশের কবিতার প্রয়োজনে বাঙালির অস্তিত্ব ও স্বাধীনতার প্রয়োজনে।
কবি আল মাহমুদ ১৫ ফেব্রুয়ারি ,শুক্রবার ,২০১৯ মৃত্যুবরণ করেন।
খোকসা, কুষ্টিয়া।
১১/০৭/২০২১ ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর