প্রকৃতির বুক চিরে হাঁটছি আমি নিভৃতে, নির্জনে একা
আসে পাশে নিস্তব্ধতা প্রকৃতির নির্দেশে চারিধারে ঘনিয়ে আছে কুয়াশার বিন্দু বিন্দু শিশিরে।
শীতের আড়মোড়া ভেঙে পাখির বুঝি ডানা ঝাপটানোর শব্দ।
খিদে তো সকল প্রাণীর আছে বিশেষ করে ছানা পোনার কথা বেশীই ভাবা।
আমি আঁকা বাঁকা পথে গাছের ডাল পালা সরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি সম্মুখে গন্তব্যহীন এক অজানার খোঁজে।
কি খুঁজছি আমি! কেনো পেরিয়ে যাচ্ছি একের পর এক ভয়াবহ জঙ্গল ভয় ড্বরের মাথা গেয়ে!
উদাসীনতায়!
হ্যাঁ আমি প্রকৃতি প্রেমী । প্রকৃতির ছোঁয়ায় আমি ফিরে পাই মায়ের স্নেহ মমতা। শুধুই ভালোবাসতে জানে ওরা আঘাত দিতে নয়।
ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে থেকে কেমন যেনো অসহনীয় হয়ে উঠেছে প্রাণ। মানুষ শুধুই নিজের স্বারথের দিকে এগিয়ে স্বার্থ ফুরোলেই কে কার ।
চুকিয়েছি সংসারের দ্বায়িত্ব কর্তব্যের ভার এখন আমি একা মনে ও শরীরে বাহিরেও। কে ওরা!
কিসের যেনো শব্দ ! না তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না তো! একটু ইতস্তত থমকে গেলাম। কোনো বন্য জন্তুর আগমন নয়তো! সূর্যির ঘোলাটে আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। তবে এগোব না পিছিয়ে! কিংকর্তব্যবিমুঢ় । না ভুদে গেলে চলবে না ,আমি একজন পথিক পথ চলতে ভালোবাসি । কিন্তু যাচ্ছি আমি কোথায় সে হদিস তো মনে রাখতে হবে!
না শব্দটা অনেক জোরে হচ্ছে এবার ওরা হয়তো কাছেই এগিয়ে আসছে। কি করব এখন! দেখা যাক কি হতে পারে পথে নেমেছি যখন।তেষ্টা পেলো যেমন মনে হচ্ছে!
জল হ্যাঁ জল তো আমার সংগে নেই । যেটুকু ছিল বোঝা ভেবে খেয়ে ফেলেছি । কি করি এখন, নদী হ্যাঁ নদীকে কোথায় পাই! নদী! তুমি আসবে একটু আমার কাছে! আমি একটু পান করব তোমায় বড্ড তেষ্টা পেয়েছে। না নদী শুনতে পাই নি আমার ডাক। ও মনে হয় ঘুমোচ্ছে জাগলে নিশ্চয়ই সাড়া দিত। আমি তাহলে ওর কাছেই বরং যাই।
কিন্তু শব্দ টা মনের ঘোর কাটছে না তো। কি করব এখন! না ভয় টা একটু কেটেছে সংগে তৃষা টা ও তাহলে চলা যাক থেমে থাকা মরণ।
আমি চলছি চলেছে সাথে আমার জীবন।
ও তাহলে আমরা দুজন এতোক্ষণ তো ভাবি নি যে আমার সংগে কেউ রয়েছে। যাক একটু আলাপ পরিচয় করা যাবে। একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম জন্মের পর থেকেই সেই একার যুদ্ধ এখনো রেশ কাটেনি হয়তো। তা তুমি কে হে আমার সংগে পথ বইছো।
আমি তোমার আত্মা গো!
তা আমার সাথে পথ বইছো কেনো!
আমি তো একা। তোমায় তো কখনো দেখি নি,
দেখবে কি করে আমি দেখা দলে তো!
ও তাই বুঝি, তুমি দেখা দিও না।
হ্যাঁ গো আমি সকল জীবের মধ্যেই বিরাজ
যাক ভালো হল একটা সংগী তো পাওয়া গেলো!
চারিদিকে একটু ফর্সা হয়ে আসছে। এবার তাহলে! একবার ও তো পিছে ফিরে তাকালাম না কতোটা বেরিয়ে এলাম ।
আর দরকারই বা কি পিছে ফিরে তাকাবার জীবনের লক্ষ্য হল সামনের দিকে তাকানো । আমি ঠিকই করছি।
ওই দূরে কি যেনো দেখা যাচ্ছে, একটা পাতার কুটির । তাহলে ওখানে কি কেউ থাকে?
দেখা যাক থাকতেও পারে আবার না ও।
বাঘ ভাল্লুক হবে না নিশ্চয়ই কারণ ওরা ওদের জায়গা ছেড়ে এখানে আসবে না।
মানুষ হলে আসতো দখল করে নিতে।
এগোই ক্ষিদে ও পাচ্ছে যদি কিছু সংগ্রহ করতে পারি। বেঁচে থাকার তাগিদে।
বুনো ফলমুল তো আছে আমার জন্য প্রকৃতি মা রেখেছে সাজিয়ে অন্নপূর্ণার মত। না ঘরটা দেখছি খালি পড়ে আছে বাসস্থানের মতো কেউ হয়তো ছিল আমার মতো না থাকতে পেরে সে চলে গেছে না হয় মরে গেছে বা বাঘ ভাল্লুকে খেয়ে ফেলেছে। ধুর কি আজে বাজে বকছি ওরা কেনো খেতে যাবে ওদের আহার রেখে।
চাল আছে কোটোয় ডাল ও একটা হাঁড়ি ও পেলাম দেখছি। যাই নদীর সন্ধানে জলের খোঁজে ওই তো একজন কুলু কুলু বেগে বয়ে চলছে। এই নদী তুমি দাঁড়াও আমি আসছি। শান্ত তুমি তোমার জলে আমি নাইব।
ও কি ঠান্ডা তুমি শীতল শরীর টা জুড়িয়ে গেলো। এতো দিনের দাপদাহে বিষময় হয়ে ছিল এই দেহ ও কি শান্তি তোমার পরশে। কথা দিচ্ছি কখনো ছেড়ে যাব না তোমাকে।
এই তো একটা পেয়ে গেছি উঃ লাফাচ্ছে ধরেই ছাড়বো তোকে। ধর ধর ফসকে গেলো কতোদূর যাবি আমি ততোদূর যাব তবু ছাড়বো না তোকে
এই তো ধরে ফেলেছি বিশাল শোল মাছ একটা দেড় কেজি হবে কম করে ওরে বাবা জলের মধ্যেও ঘাম বেরিয়ে গেলো ধরতে গিয়ে ওকে।
নদী টা টা আসছি পরে আবার আসব।
পোষাকটা চেঞ্জ করে নিই বল কেউ নেই এখানে উলঙ্গ হয়ে। এই আমি দেখছি কিন্তু সব।
এই রে কে আবার দেখছে উঁকি মেরে কোথা থেকে ।চোখ বন্ধ কর হয় তুমি না হয় আমি । বদলে ফেললাম । ভাতটা চাপিয়ে দেওয়া যাক কিন্তু আগুন জ্বালবো কি করে? আচ্ছা ওই তো পাহাড় তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে আমার কান্ড কারখানা। ও ভাই পাহাড় আগুনের ফরমূলা জানা আছে। থাকলে বতলাও।
সাদা পাথরের দুখন্ডে ঘষা দাও দেখবে জ্বলে উঠবে। গুড আইডিয়া ধন্যবাদ পাহাড় স্যার সেলুট।
আঃ মজা করে খাওয়া যাবে।শোল মাছটা কেটে পেটের নাড়ীটা বের করে দিতে হবে। তার পর আগুনে ঝলসে ও গরম গরম ভাতে সেদ্ধ মাছ দারুন স্বাদ। একটু বিশ্রাম নেওয়া যাক।
বিকেলের সফর আছে। রাতের ঘুমটা ও ভালো হবে। দারুণ ঠিকানা পেলাম একটি নতুন আস্তানা। এভাবেও বেঁচে থাকা যায়।