‘ উন্নত মম শির’
আইনুল হোসেন সানু
বল বীর,
বলেছিলে তুমি-ই
একদা, উন্নত মম শির, শির নেহারি ঐ
হিমাদ্রির, খুব আছে মনে —
খোশালাপে
ছিলো মশগুল,
হঠাৎ কি’ যে’ হলো
উদ্ধত রক্তিম রাঙিয়ে দু’ চোখ’ ক্রোধে
বাঁকিয়ে কাঁধ ঝাঁকিয়ে বাবরি চুল আক্রোশে ছেড়ে হুঙ্কার পড়েছিলে ফেটে,!
আজও অজানা
প্রেরণাতে কার ব্যাকুল,
ম্রিয়মান উঠলে গেয়ে অমন, দোলে ঐ
সন্ধ্যা মালতী বকুল,!
ওহে
প্রিয়’ নজরুল
বড্ড জানতে, কেমন করে হলে
গানের পাখি বুলবুল….
কাক
ফাটা রৌদ্দুর
ছেড়ে গরু মাঠে
বসি নির্জিব আকাশ তলে ঐ
হিজল ছায়ে,
পড়ন্ত বিকেল গোধূলী র লগ্নে কিংবা
অমোঘ ঘনালে আঁধার একা
হলে সন্ধ্যা’ পার….
নিমগ্নে
বিভোর জ্যোৎস্না রাতে
বাজাতে বাঁশি মোহিনী সুরে রোজ
জেগে নিশি একা, মূর্ছনাতে উঠতো নাচন
মাতাল হাওয়া’ পাগল পারা সেই সুরে,
হারালো কখন কে’ জানে ঘর হারা
কত মন ভবঘুরে —-
কঠিন
পাহাড় শিলা
নুয়েছিলো শির সেও
সম্মুখে তোমার, কার বলে তে
বলীয়ান, ঝঙ্কারে গর্জে অমন গলা ছেড়ে গান,
ভাঙরে গারদ
ভাঙ
তালা ভাঙ
সমূলে সব কপাট,
তোরা কর’ রে লোপাট,
কেন’ উসৃঙ্খল এমন’ বুঝি’ ফেরাতে
সুসৃঙ্খল যত’ ঐ —?
বলো না’ মহান
হে প্রিয়’ কবি’ নজরুল,
বলবে
আছে কি’ মনে,
কোথা’ হতে পেয়েছিলে অমন
নির্ভিক সাহস মনোবল … ?
বাবরি
দোলানো ঐ
ঝাঁকড়া চুল ছিলো
নিমজ্জিত কাঁধ, উদ্ধত হাত
বিস্ফারিত আগুন রঙা টকটকে লাল
দু’ টি চোখ’ যেন’ অগ্নিবীণা ….
এসো
হে’ বিদ্রোহী
হয়ে বিদ্যুৎ একবার
বাঁধো বাসা অন্তরে মোর
এসে একবার —
বইছে হেথা আজ
ভাবাবেগ করুন বিষাক্ত বাতাস
প্রবল ভীষণ,
বিতশ্রদ্ধ মন
আর মস্তকে কুন্ঠিত বোধ
যখন তখন এই পড়োপড়ো হানে বজ্রাঘাত,
যেন’ ভেঙে মহাকাশ সমতল ….
দাও
হে’ প্রিয়’
করো শান্ত এ’ মন
কবি’ প্রিয়’ মোর,
শ্রান্ত ভ্রান্ত আজ কষ্ট দারুন
ভরে ভবে বেঁচে অশান্ত এ’ মন’ আমার…
চাই ওঠো
ঝরো বজ্রবৃষ্টি একবার
চমকিত বিদ্যুৎ স্পৃশ্যত নয় সুবাসিত
সোনা ঝরা সোনালী’ কিরণ এক মুঠো
রৌদ্দুর ফের জেগে উঠুক
অন্তর সবার ….
ভুলিয়ে দাও
যত ব্যাথা হৃদয়ের,
যাও এসে শুনিয়ে গান ঐ
ঘুম পাড়ানির চিরতরে মোদের
হোক’ শেষ বার,
শুভ্র মনে
হেসে ওঠো গেয়ে
হোক’ না সে’ শুধু একবার
কোনো এক পবিত্র
ভোরে …..
আমি
চিরতরে
দূরে চলে যাবো,
তবু, আমারে দেবো না
ভুলিতে …….
লাকসাম,২৫-মে’ ২০২১