ওয়াসিম আকরাম রিয়াদ # লোকে বলে ধৈর্য্যের ফল মিষ্টি হয়। ফুটবল ইতিহাসে এমন ফাইনাল খেলা দেখেছে কিনা জানা নেই। অবিশ্বাস্য, অতুলনীয়, শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ দেখলো ফুটবল বিশ্ব। কোনো শব্দে উদাহরণ দেয়া সম্ভব নয়। সৌদি আরবের কাছে হেরে অনেকের কাছে ধারণা হয়েছিলো আর্জেন্টিনার পথ হয়তো লম্বা হবে না। সমালোচনা, ট্রল সব উড়িয়ে দিয়ে আর্জেন্টিনা প্রমাণ করলো এভাবেও প্রত্যবর্তন করা সম্ভব। দেখিয়ে দিলো কিভাবে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা যায়। সেই সাথে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান হয়ে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিলো বটে। দীর্ঘ ছত্রিশ বছর পর বিশ্বকাপ জিতলো আর্জেন্টিনা। খেলা শুরু হওয়ার বত্রিশ মিনিটে ডি-বক্সের মধ্যে ডি মাড়িয়ে কে ফাউল করে এবং সেটা পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। পেনাল্টিতে মেসি গোল করেন। এক শুন্যতে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। পরে ডি মারিয়ার অসাধারণ গোলে আবারো লিড নেয় আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে খেলা শেষ হয় দুই শূণ্য গোলে। দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা ভালো শুরু করলেও ডি মারিয়ার তুলে নেয়াতে চাপে পরে যায় আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনার ডি বক্সের মধ্যে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। এমবাপ্পে পেনাল্টিতে গোল করে এগিয়ে নেয় ফ্রান্স কে।তার চার মিনিটের মাথায় এমবাপ্পে দূর্বার শর্টে আবার গোল পায় ফ্রান্স।
সমতায় ফেরে ফ্রান্স এবং শুরু হয় ফ্রান্সের আক্রমণ। নির্ধারিত সময়ে নব্বই মিনিটে ড্র থেকেই খেলা শেষ হয়। খেলা চলে যায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে।
আর্জেন্টিনা আক্রমণ শুরু ফ্রান্সের বিপক্ষে।একের পর এক আক্রমণে মেসির ম্যাজিক গোলে আবার এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ চলে দু’দলের মধ্যে।ত্রিশ মিনিটের শেষ হবার তিন মিনিট থাকতে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স।এমবাপ্পে পেনাল্টিতে গোল করো আবার সমতায় ফেরে ফ্রান্স সেই সাথে হ্যাট্রিক করেন এমবাপ্পে যা এবারের বিশ্বকাপে প্রথম।
আক্রমনের ঝড় তোলে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা কিন্তু সব ব্যার্থ হয়ে যায় এবং শেষ হয় একশ বিশ মিনিটের খেলা।অবশেষে খেলা চলে যায় পেনাল্টিতে। পেনাল্টিতে প্রথমে গোল করেন এমবাপ্পে। পরে মেসিও গোল করেন। দূর্ভাগ্যবশতঃ পরপর দুইটা পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেয় আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলি মার্টিনেজ এবং তৃতীয় পেনাল্টি গোল পোস্টের বাইরে মারেন ফ্রান্সের খেলোয়াড়।তিনটা পেনাল্টি মিস করে জয় থেকে দুরে চলে যায় ফ্রান্স । পরে আর্জেন্টিনা পেনাল্টিতে গোল করে জয় নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা।
আট গোল করে এমবাপ্পে জিতে নেয় গোল্ডেন বুট।সেরা খেলোয়াড় হয়ে মেসির হাতে ওঠে গোল্ডেন বল। সেরা গোলরক্ষকের গোল্ডেন গ্লাভস পায় আর্জেন্টিনার এমিলি মার্টিনেজ এবং সেরা ইয়াং খেলোয়াড় নির্বাচিত হন আর্জেটিনার ইনজো ফেরনানডেজ। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হলো আর্জেন্টিনার বত্রিশ বছরের অপুর্নতা এবং মেসির শেষ বিশ্বকাপ। একজন কিংবদন্তি খেলোয়াড় বিশ্বকাপের মাঠে আর দেখা যাবে না।আর মধ্যে পুরন হলো মেসির স্বপ্ন এবং খেলোয়াড় জীবনের সেরা অর্জন।