তাঁর পিতা স্কুল শিক্ষক মহঃ নিয়ামত আলী, এবং মাতা মোছাঃ মেহেরুন নেছা। কবি তাঁর পিতা-মাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। শিক্ষাগত জীবনে প্রাথমিকে লেখাপড়া করেন: জয়ন্তীহাজরা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়, খোকসা, কুষ্টিয়া। এসএসসি :শোমসপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, খোকসা, কুষ্টিয়া। এইচএসসি : শোমসপুর আবু তালেব ডিগ্রি কলেজ, খোকসা,কুষ্টিয়া। বিএসসি অনার্স (পদার্থ বিজ্ঞান) :কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, কুষ্টিয়া। এমএসসি(পদার্থ বিজ্ঞান) সরকারি বাঙলা কলেজ, মিরপুর,ঢাকা এবং সর্বশেষে বিএড করেন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
কবির স্ত্রীর নাম জেসমিন নাহার এবং একমাত্র সন্তানের নাম লাবণ্য রহমান।
পেশাগত জীবনে কবি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক পিতার আদর্শকে ধারণ করে শিক্ষকতাকেই বেছে নিয়েছেন জীবনের ব্রত হিসেবে। তিনি বর্তমানে সহকারী শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন একই উপজেলার জয়ন্তীহাজরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সার্বক্ষণিক দেশ-বিদেশে সফর করার দুর্নিবার ইচ্ছে A+রক্তের গ্রুপের এই কবির হৃদয়কে ব্যকুল করে তোলে। তবে অবসর সময় পেলেই বই পড়া, বাগান করাসহ ছোট্র ছোট্র সোনামনি ও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে দারুন দারুন গল্প করে শুনিয়ে থাকেন।
কবি মোঃ জিল্লুর রহমান লালন কবিতা,ছোট গল্প ও উপন্যাস লিখে্ ইতোমধ্যে পাঠক মহলে হয়েছেন সমাদৃত।কোন গ্রন্থ প্রকাশিত না হলেও দেশ বিদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার লেখা ছাপা হচ্ছে গুরুত্বের সাথে। সাহিত্য কর্মের পূরস্কার হিসেবে স্বরচিত কবিতা পাঠ করে পেয়েছেন খুলনা বেতার থেকে সম্মাননা পূরস্কার। কবি গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন নামে একটি সংগঠনের সাথেও যুক্ত রয়েছেন। আমরা উদিয়মান এই কবির সার্বিক সফলতা কামনা করি। । কবির সাথে যোগাযোগ করার জন্য রয়েছে কয়েকটি মাধ্যম । মোবাইল :01716572060/ 01975572060 ই-মেইল :zrlalon1983@gmail ফেসবুক : Zillur Rahaman Lalon.\
আমরা এখানে কবির পাঁচটি কবিতা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। আশাকরছি প্রিয় পাঠক, কবিতাগুলি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে এবং নতুন চিন্তুর খোরাক যোগাবে।
মোঃ জিল্লুর রহমান লালন এর পঞ্চকাব্য
এক.
বিভেদ ভুলে যাই
দিনে দিনে সমাজটাতে
লাগছে যেন ঘুন
স্বার্থের দ্ব্ন্ধ সবখানে আজ
সহোদরকে করছে খুন।
বিভেদের দেয়াল দিচ্ছে তুলে
বাড়ির মধ্যিখানে
আপনকে পর করছে সবাই
দারিদ্রতার অপমানে।
অর্থের-ই অহমিকায়
হুঁশ হারা আজ হচ্ছে সব
হকদারের, হক মেরে আজ
করছে না তা অনুভব।
অর্থ আছে তাই বলে কী
শোধ করা যায় মায়ের ঋণ
বাবার স্নেহ -ভালোবাসা
শোধ হবে না কোন দিন।
গুরুজনের আশীষ -দোয়া
টাকা দিয়ে যায় কী কেনা….?
বিপদে না পরলে কী আর
আসল স্বজন যায় কী চেনা?
মিলে মিশে থাকতে সবাই
সব ভেদাভেদ যাই ভুলে
অহমিকার দেয়াল ভেঙে
বলব কথা মন খুলে।
দুই.
মনুষ্যত্ব বিকার
এ বাড়িতে শব দাফনের
চলছে আয়োজন
প্রতিবেশী বক্স বাজিয়ে
করছে বিয়ের নাচন।
বাসের মধ্যে চোর-ডাকাতে
নিচ্ছে যখন লুটে
ছবি তোলায় ব্যস্ত সবাই
আসছে না কেউ ছুটে ।
চলতি পথে রাস্তাঘাটে
হলে হতাহত
কেউ আসে না একটু কাছে
চেয়ে থাকে যত।
পথেরধারে অন্ধজনের
রাস্তা পারাপারে
ব্যস্ত জীবন , ছুটছে সবাই
কেউ পার করেনা তারে।
কেন, মনুষ্যত্বের এমন বিকার
হচ্ছে দিনে -দিনে—?
পাইনা কোন জবাব যে তার
আত্ম-দর্শন বিনে।
তিন.
পালা বদল
সেকালেতে দাদা-দাদির মিষ্টি শাসন
কানমলা আর চড়
সে-সব কথা পড়লে মনে
আজও বুক করে ধরফড়।
শাসন বিনে একালেতে
হচ্ছে বেয়াদব
গুরুজনের মান রাখে না
নেই কোনো আদব।
সেকালেতে এক পাতিলে রান্না হতো
অনেক লোকের ভাত
মজা করে বসত খেতে
সকলে একসাথ।
একালেতে যোজন -বিয়োজন
সবার মনের সাধ
বিয়ের আগেই পড়ে যেন
দুই এর ধারাপাত।
সেকালেতে কাটত সময়
পুতুল বিয়ের খেলায়
উড়তো যেন নীল আকাশে
সাদা মেঘের ভেলায়।
একালেতে কাটছে সময়
অনলাইনের গেমে
বইয়ের বোঝা বইতে গিয়ে
যাচ্ছে নেয়ে ঘেমে ।
সেকালেতে সবাই ছিল
সবার সমব্যথী
দুঃখ -সুখে পরষ্পরের
ছিল চলার সাথী।
একালে সব, মানুষ যেন
বড়োই স্বার্থপর
বিপদ দেখে দেয় পিছুটান
আপন করে পর।
চার.
আগ্রাসন
সামরাজ্যবাদী হায়নার চোখ
আমার স্বাধীন সোনার বাংলায়
কষ্টার্জিত পতাকা আমি আগলে রাখি
বুকের গহীনে, হৃদয়ের আঙ্গিনায়।
তিন দিকে কাঁটা তার
একদিকে জলাধার
তার মাঝে “ব”দ্বীপ আমার
স্বাধীন ভূখণ্ড এক….
সবুজ -সোনার বাংলা।
সম্প্রীতির এদেশে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে
একসাথে করে বাস
সীমান্তের কাঁটা তারে তবুও দেখি
ফেলানীর ঝোলে লাশ।
তিস্তার পানি নিয়ে
হলো কতো কেচ্ছা
পানি বিনে মরুভূমি
নেই পানির হিস্যা।
নাফ নদীর ওপারে…..
রোহিঙ্গা লাখে -লাখ
পুশইন হয় শুধু
এপারে ঝাঁকে -ঝাঁক।
অস্ত্র আর মাদক আসে
কাঁটা তার পেরিয়ে
আসে সব রাতে- দিনে
সবার চোখ এড়িয়ে।
‘আম’ আর ‘মাছ’ দিয়ে
” শাক দিয়ে ঢাকো মাছ”
বাংলার জমিনে আজ
রোহিঙ্গা করে চাষ।
যুব সমাজ ধ্বংস আজ
মাদকের কবলে
জাতি আজ দিশেহারা
মরণ নেশার ছোবলে।
বাঁচাও এ যুব সমাজ
মাদকমুক্ত গড়ো দেশ
গড়ে তোলো সোনার বাংলা
বিশ্বসেরা বাংলাদেশ
পাঁচ.
অচেনা বসতি
আপন ঘরে বসত করে
তবু অচেনা
ভয়, ভরসা, ভালবাসায়
যায় কি তারে কেনা?
জাত-সিফাতে বিরাজ করেন
তিনি সর্বক্ষণ
অনু কিংবা পরমানুয়
তাহার অনুরণ।
“আমি” তে সে সদাই আসীন
“আমিত্ত্ব”তে নাই
এসব কথা, সবই লেখা
সূফীবাদে পাই।
সদাই তিনি বিরাজ করেন
আপন মহিমায়,
পাহাড়, সাগর অরণ্যে আর
রক্তের কনিকায়।
ভবের হাটে, ভাবের দেশে
কোথায় তুমি নাই!
” কাল্বে” মোমিন আসন বলে
দেখতে তোমায় পাই।
ধন্যবাদ জানাই বিদগ্ধ সকল পাঠককে।
আমার খুব ভালো লাগছে এই ভেবে যে ছোট ভাই লালনের জন্য আমিও অনেক অচেনা লোকের সাথে পরিচিত হতে পারছি।আমি গর্বিত আনন্দিত। লালনের জন্য শুভকামনা ও দোয়া সবসময়।
কবিতা গুলো আমার কাছে খুব সুন্দর লাগছে। দোয়া করি দোস্ত তুমি আরও ভালো কবিতা মানুষকে উপহার দিবে। যাতে করে তোমার কবিতা পাঠ করে এই অন্ধকারে পরে থাকা মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করবে