রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
শিরোনাম :
বাৎসরিক আনন্দ ভ্রমণে কক্সবাজার গেলেন পাংশা প্রেসক্লাবের সদস্যরা মিঠাপুকুরে শাড়ী পেচিয়ে এক মহিলার আত্ম হত্যা পাংশায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত মৃত্যুর আগে ওয়াশরুম থেকে কবি হেলাল হাফিজের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ অনন্তলোকের চিরন্তন সফরে কবি হেলাল হাফিজ পাংশায় পুলিশকে দেখে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পালানো আসামী গ্রেফতার ক্ষমা চাইলেন মুফতি আমীর হামযা আশা জাগিয়ে রাখি পাংশায় আগুনে পুড়ে ছাই হলো ৪টি ঘর খোকসায় আ.লীগ নেতাদের ছাড়াতে বিএনপির হাইব্রীড নেতাদের তদবিরে জনমনে প্রশ্ন  খোকসায় আওয়ামীলীগ নেতা আটক, ছাড়িয়ে নিতে কৃষকদল নেতার তদবীর রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত কবি রফিকুল্লাহ কালবী : সাক্ষাৎকার পাংশায় যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে র্যালী, কেক কাটা ও আলোচনা সভা কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ বৈঠকে আমীরে জামায়াত
বিশেষ ঘোষনা
বাংলাদেশ ভূমি ডটকম এ আপনাকে স্বাগতম। আপনার মূল্যবান সাহিত্য-কর্ম প্রকাশের জন্য বাংলাদেশ ভূমি’তে পাঠিয়ে দিন। এছাড়াও আপনার চারপাশের যে কোন খবর লিখে পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে। আমরা বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে তা প্রকাশ করবো। যোগাযোগ: খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন, মোবাইল-  ০১৭৫০৪৯৫৮২০ , ই-মেইল: bangladeshbhumi@gmail.com, এছাড়াও ভিজিট করতে পারেন বাংলাদেশ ভূমি/ @Bangladeshbhumi / খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন ইউটিউব চ্যানেলগুলি। এখন থেকে নিয়মিত বন্ধ্যান্ত, যৌন, পাইলস, নাকের পলিপাসসহ যাবতীয় রোগের চিকিৎসা করছেন: খ্যাতিমান হোমিও চিকিৎসক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হুসাইন (ডি.এইচ.এম.এস; এম.এ) । খন্দকার হোমিও হল, মুসলিমপাড়া, হেমায়েতপুর, সাভার, ঢাকা। রোগী দেখার সময়: বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।

নেচে-গেয়ে লাশ দাফনের পর এবার — কুষ্টিয়ায় ভন্ড পীরের আরেক ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া / ৪২৫ জন পড়েছেন
আপডেটের সময় রবিবার, ৩০ মে, ২০২১, ৫:০০ অপরাহ্ন

নেচে-গেয়ে লাশ দাফনের পর এবার
————
কুষ্টিয়া দৌলতপুরের ভন্ড পীর শামীমের আরেক ভিডিও ভাইরাল
============
ঢোল-টগর বাজিয়ে নেচে-গেয়ে অনুসারীদের নিয়ে এক কিশোরের লাশ দাফনের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার কথিত ভণ্ডপীর শামীমের আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভণ্ড শামীম আয়েশি ভঙ্গিতে ফুলের মালা গলায় দিয়ে চেয়ারে বসে আছেন। চারদিক থেকে তাকে ঘিরে রেখে নারী-পুরুষরা নেচে-গেয়ে ‘হরে হরে, হরে হরে, হরে শামীম, হরে শামীম’ বলে সবাই চিৎকার করছেন। শামীম একটি বড় গামলায় দুই পা দিয়ে রেখেছেন। আর ভক্তরা দুধ দিয়ে তার পা ধুয়ে দিচ্ছেন, কেউবা চুমু খাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার হামাগুড়ি দিয়ে পায়ে মাথা ঠুকে তাকে সিজদা করছেন।
মোবাইল ফোনে ধারণকৃত দুই মিনিট এক সেকেন্ডের এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে আবারও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। বইছে সমালোচনার ঝড়। এতে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার সাধারণ মানুষ অবিলম্বে এসব ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধের পাশাপাশি ভণ্ড শামীমের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে গত ১৬ মে রাতে পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের মহাসিন আলীর কিশোর ছেলে আঁখি (১৭) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। মহাসিন আলী ওই গ্রামের কথিত ভণ্ডপীর শামীমের অনুসারী হওয়ায় ছেলের মরদেহ তার হাতে তুলে দেন। ওইদিন রাতে শামীম তার অনুসারীদের নিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে আঁখির মরদেহ দাফন করেন। স্থানীয় মুসল্লিরা এর তীব্র বিরোধিতা করলেও শামীম ও তার অনুসারীরা কর্ণপাত না করেই তাদের রীতি মেনে মরদেহ দাফন করেন। নেচে-গেয়ে মরদেহ দাফনের ওই ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিলে তা ভাইরাল হয়।
কে এই শামীম?
======
শামীমের পুরো নাম মো. শামীম রেজা। তার বাবা মৃত জেসের মাস্টার ছিলেন স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তার বড় ভাই শান্টুও স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন।
শামীম পশ্চিম-দক্ষিণ ফিলিপনগর গ্রামের ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। ১৯৮৪ সালে ফিলিপনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। কুমারখালী ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ভেড়ামারা কলেজ থেকে বি কম পাস করে পরবর্তীতে ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে এম কম পাস করেন।
পড়ালেখা শেষ করে ঢাকার জিনজিরা এলাকায় একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন শামীম রেজা। পরবর্তীতে ওই চাকরি ছেড়ে দিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জের গোলাম-এ-বাবা কালান্দার জাহাঙ্গীর সুরেশ্বরীর মুরিদ হন এবং খাদেম হিসেবে সেখানে বসবাস শুরু করেন।
কথিত পীর গোলাম-এ-বাবা কালান্দার জাহাঙ্গীর সুরেশ্বরীর মুরিদ হওয়ার পর থেকে শামীম পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুজি করেও শামীমের সন্ধান লাভে ব্যর্থ হন।
২০০৭ সালে শামীম বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু সে বিয়ে দুই-তিন মাসের বেশি টেকেনি। প্রায় বছর দুয়েক আগেই হঠাৎ করেই শামীম নিজ গ্রাম ইসলামপুর ফিরে আসেন এবং তার বাড়িতেই আস্তানা গড়ে তোলেন। যে শামীম এক সময় জিন্সের প্যান্ট-গেঞ্জি পড়ে ঘুরে বেড়াতেন, এলাকায় ফিরে আসার পর দেখা যায় শামীমের মুখে লম্বা দাঁড়ি। গেরুয়া-পাঞ্জাবি পরা। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া প্রায় দুই বিঘা জায়গা নিয়ে শামীম বসবাস শুরু করেন। সেখানেই তার আস্তানা।
স্থানীয়রা জানান, শামীম এবং তার অনুসারীরা পুরোপুরি নাস্তিক। তারা ইসলাম ধর্ম, আল্লাহ, নবী-রসুল কোনো কিছুকেই বিশ্বাস করে না।
শামীমের আস্তানায় দিনরাত সব সময় কমবেশি লোকজন আসা যাওয়া করতে দেখা যায়। ফকির-সাধু ভেবে এলাকাবাসী এতোদিন তাকে গুরুত্ব দিতো না। কিন্তু দিন দিন শামীমের আস্তানায় তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ, শিশু থেকে সব বয়সী মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে।
প্রায় রাতেই আস্তানায় ঢোল-ডগর বাজিয়ে অশ্লীল নাচ-গানের আসর বসতে দেখা যায়। গান-বাজনার পাশাপাশি চলে গাঁজা-ইয়াবা সেবনের আসর।
বছরে দু-একবার শামীমের আস্তানায় ওরশ বসে। তার শত শত ভক্ত-অনুসারীরা এখানে ভিড় জমান। অনেকটা হিন্দুরীতিতে নেচে-গেয়ে তারা শামীমের নাম যপ করতে থাকেন।
এলাকাবাসী জানান, শামীমের ভক্ত-অনুসারীদের বেশিরভাগই অল্প বয়সী তরুণ-তরুণী। শামীম নিজে এবং তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন অনুসারী অশিক্ষিত এবং অল্প শিক্ষিত মানুষজনকে মগজ ধোলাই করে শিষ্যত্ব লাভে বাধ্য করেন। প্রায় দুই বছর ধরে তার আস্তানায় নাচ-গানসহ অশ্লীল এবং ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড চললেও মূলত গত ১৬ মার্চ আাঁখি নামের এক কিশোরের লাশ ঢোল-তবলা বাজিয়ে নেচে-গেয়ে দাফন করার পর থেকে শামীম সবার আলোচনায় চলে আসেন।
ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী
============
নেচে-গেয়ে ঢোল-ডগর বাজিয়ে মরদেহ দাফন করা থেকে শুরু করে একের পর এক ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ইসলামপুর গ্রামের মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শামীমের একের পর এক ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় এ নিয়ে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
দৌলতপুর উপজেলা যুবলীগের ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম কবিরাজ বলেন, ‘নেচে-গেয়ে ঢোল-ডগর বাজিয়ে লাশ দাফন করার পরের দিন আমরা স্থানীয় মসজিদের ইমামসহ এলাকাবাসী ইউএনও এবং ওসির কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের আইন হাতে তুলে না নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি মোকাবিলা করার কথা জানিয়েছেন।’
ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল হক কবিরাজ বলেন, ‘শামীম একজন ভণ্ড। ইসলামের নাম নিয়ে সে যেসব অপকর্ম করছে একজন মুমলমান হিসেবে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।’
ভণ্ডপীর শামীম প্রসঙ্গে কথা হয় কুষ্টিয়া-১ দৌলতপুর আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আ ক ম সারোয়ার জাহান বাদশার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শামীম আর আমার ওয়ার্ড একই ৬নং ওয়ার্ডের। আমরা একই গ্রামের মানুষ। প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় শামীম নিখোঁজ ছিল। ইসলামের নামে সে আস্তানা বানিয়ে যা করছে তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।’
‘শামীমের বাবা এবং বড়ভাই স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। একসময় তারা খুবই ভদ্র পরিবার হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। শামীম ফিরে এসেছে শুনে ৪-৫ মাস আগে একদিন আমি শামীমের বাসায় গিয়েছিলাম। কিন্তু তখনও শামীমের এসব ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আমি জানতাম না। গত ১৬ মে আমার গ্রামের আঁখি নামের একটা ছেলে মারা যায়। আমি ছেলেটার জানাজায় অংশগ্রহণ করার পর দেখি দাফন করতে দেরি হচ্ছে।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর কয়েকজন বলল, আপনি বাসায় যান, আমরা দেখছি। আমি বাড়ি ফিরে গেলাম। পরের দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম নেচে-গেয়ে ঢোল-ডগর বাজিয়ে লাশ দাফন করছে শামীম ও তার লোকজন।
বিষয়টি দেখেই আমি দুজন প্রতিনিধিকে শামীমের বাসায় পাঠায় কেন সে এ ধরনের ইসলামবিরোধী জঘন্য কর্মকাণ্ড করেছে। শামীম আমার দুই প্রতিনিধিকে বলেছে, সে যেটা করছে সেটাই নাকি সঠিক। তার কাছে এর প্রমাণ রয়েছে। আমরা যেটা করি সেটাই নাকি বেঠিক। ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা তার এসব ইসলামবিরোধী কর্মকান্ডের ঘৃণা এবং তীব্র নিন্দা জানাই।’
জানতে চাইলে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার বলেন, ‘শামীমের ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড জানার পর আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সর্তক করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে কেউ তার বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আমাদের পক্ষে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা সুবিধা হবে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর